উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ উভয়পক্ষের আহত ১০

মুজিবনগর মোনাখালী ইউনিয়ন ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষ

 

স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুরের মুজিবনগরে আওয়ামী লীগের দু পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মোল্লাসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। মোনাখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি নির্বাচন কেন্দ্র করে ভবানীপুর গ্রামের আওয়ামী লীগকর্মী আতাউর রহমান আতা ও রফিকুল ইসলাম মোল্লা পক্ষের লোকজন প্রথমে চেয়ার ছুটে এবং পরবর্তীতে লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

আহতরা হচ্ছেন- রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে তোহাসিন আলী, আওয়ামী লীগকর্মী হাসান আলী, বাবলা মোল্লা, আতাউরের ভাই মিয়ারুল ইসলাম ভেটা, ছেলে উমর খউম, আ.লীগকর্মী আফসের আলী, জিয়ারুল ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দীন বাবলু। আহতদের উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, ভবানীপুর ও রামনগর গ্রাম নিয়ে গঠিত মোনাখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গতকাল বিকেলে সম্মেলন শুরু হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউদ্দীন বিশ্বাস। সম্মেলনে দু গ্রামের লোকজন নিজের গ্রামের কাউকে সভাপতি নির্বাচিত করার লক্ষ্যে লবিং শুরু করেন। এ নিয়ে শুরুতেই উত্তেজনা চলছিলো। প্রথমে বাগবিতণ্ডা এবং পরে তা রক্তক্ষয়ী অপ্রতিকর ঘটনার জন্ম দেয়। কোনোপক্ষই সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদ ছাড়তে অনড়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি, চেয়ার ছুড়াছুড়ি এবং শেষ পর্যন্ত লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের মধ্য দেয় সংঘর্ষ শুরু হয়। অবশ্য মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার আগেই জখম হন কয়েকজন।

আহতদেরকে উদ্ধার করে নেতাকর্মীরা মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এদের মধ্যে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন এবং মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে অপর দুজনকে ভর্তি করা হয়।

এদিকে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই সময়ে ভর্তি হন রফিকুল ইসলাম মোল্লা ও অপরপক্ষ আতাউর রহমানের ভাই মিয়ারুল ইসলাম ভেটা। ওই অবস্থায় রফিকুল ইসলাম মোল্লা ও তার লোকজন ভেটাকে মারধর করে বলে অভিযোগ করেন আতাউর রহমান। এ সময় হাসপাতালের কর্মরতরা চারদিকে ছুটাছুটি শুরু করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

হাসপাতালে মারধরের বিষয়ে জানতে চেয়ে রফিকুল ইসলাম মোল্লার মোবাইলে যোগাযোগ করলে তার ব্যবহৃত মোবাইলফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। অপরদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়া উদ্দীন বিশ্বাস মোবাইলফোন রিসিভ না করায় সংঘর্ষের ঘটনা ও সম্মেলনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে জানিয়েছেন মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম।