মাজেদুল হক মানিক/মহসিন আলী: যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ দিয়েই চলাচল করছে মেহেরপুর থেকে রাজশাহী ও বরিশাল রুটের বিআরটিসি বাস। ওই রুটে সরাসরি বিকল্প কোনো বাস না থাকায় জরুরি প্রয়োজনে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে চড়ছেন বিআরটিসি বাসে। তবে রাষ্ট্রায়াত্ব এ বাহনে চড়ার প্রতি যাত্রীদের চরম আগ্রহ থাকলেও বাসের দুর্দশায় আগ্রহ হারাচ্ছেন যাত্রীরা।
২০০১ সালে মেহেরপুর থেকে ১৪টি রুটে বিআরটি বাস চলাচল শুরু হয়। এর মধ্যে মেহেরপুর থেকে শরীতপুর, খুলনা, পটুয়াখালী, দৌলতদিয়া ঘাট, রংপুর, বগুড়া, পঞ্চগড়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে ১টি করে এবং ঢাকা রুটে ৬টি। ঢাকা রুটে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসও ছিলো। এতে যাত্রীদের মাধ্যে আশা জাগায়। ব্যক্তি মালিকানাধীন বাসের চেয়ে বিআরটিসি বাসের যাত্রী বাড়তে থাকে। শুরুতেই আশানুরুপ যাত্রী হওয়ায় লাভের মুখ দেখে বিআরটিসি। কিন্তু বাসের লক্কড়-ঝক্কড় অবস্থার কারণে যাত্রী হারাতে থাকে। কমতে থাকে রুট। বর্তমানে শুধুমাত্র মেহেরপুর থেকে রাজশাহী ও গাংনী থেকে বরিশাল রুটের দুটি বাস চলাচল করছে। এ দুটি বাসের অবস্থায়ও করুন। পথের মধ্যে প্রায়ই বন্ধ হয়ে যায়। স্ট্যার্ট করতে যাত্রীদের সিট থেকে নেমে বাস ঠেলতে হয়। প্রতিদিনই মেহেরপুর থেকে রোগী, ছাত্রছাত্রী ও ব্যবসার কাজে ওই দুটি রুটে অনেক যাত্রী চলাচল করেন। সরাসরি অন্য কোনো বাসের সার্ভিস না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই যাত্রীরা উঠছেন বিআরটিসি বাসে। বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেও মিলছে না ভালো মানের বাস। বর্তমানে রাজশাহী রুটের বাসে লাভ হলেও অব্যাহত যাত্রী কমার কারণে লোকসানের আশঙ্কা করছেন বিআরটিসি মেহেরপুর কাউন্টার মাস্টার রাশেদুজ্জামান খান প্রদীপ। এদিকে বৃষ্টির সময় বাসের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। সিট ভিজে বসার পরিবেশ থাকে না। ত্রিপল দিয়ে ছাদ ঢেকে বাস চালানো হয়। আবার পথের মাঝে বাস বন্ধ হলে স্ট্যার্ট করতে যাত্রীদের নেমে বাস ঠেলতে হয়। অর্থ বেশি দিয়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা। এমন অভিযোগ যাত্রীদের।
কাউন্টারসূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী ও বরিশাল রুটে শুধুমাত্র দুটি বাস চলাচল করে। ভোরে মেহেরপুর থেকে ছেড়ে আবার রাতে মেহেরপুর ফিরে আসে। পরদিন আবার শুরু হয় যাত্রা। দীর্ঘদিন ধরে বাসের বেহাল দশা হলেও মেরামত করা হচ্ছে না। বাসের ছাদ ভেঙে পড়ছে। দরজা, জানালা ও সিট অরক্ষিত। যাত্রীদের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। এমন অভিযোগ করলেন রাজশাহী রুটের যাত্রী মুজিবনগরের শফি উদ্দীন। তবে যাত্রীসেবার মান নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিআরটিসি বাসচালক। সুপারভাইজার বললেন, কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করেও প্রতিকার হচ্ছে না।
বাসের বেহাল দশার কথা জানতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বিআরটিসি পাবনা ডিপো ইনচার্জ নাছিরুল ইসলামের সাথে। সাংবাদিক পরিচয় এবং বাসের বেহাল দশার কথা বলতেই তিনি বলেন, এখন সময় নেই পরে কথা বলবো।