চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়াসহ সারাদেশে ২০ দলের হরতাল পালিত
মাথাভাঙ্গা মনিটর: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের দাবিতে গতকাল সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালে চুয়াডাঙ্গা শহর ছিলো অনেকটাই শান্ত। শহরে পুলিশি টহল ছিলো চোখে পড়ার মতো। চুয়াডাঙ্গা থেকে কোনো সড়কে বাস ছেড়ে যায়নি। তবে অবৈধযান নসিমন, করিমন, আলমসাধু ও ব্যাটারিচালিত অটো-থ্রিহুইলার অবাধে চলাচল করতে দেখা গেছে। ব্যাংক-বীমায় লেনদেন অন্য দিনের চেয়ে কিছুটা কম ছিলো। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিপণী-বিতানগুলো আংশিক খোলা থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিলো তুলনামূলক কম। হরতালকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা শঙ্কা বিরাজ করছিলো। সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা কোর্টমোড় থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের নেতৃত্বে পিকেটিং মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ হয়। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াহেদুজ্জামান বুলার নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে একটি পিকেটিং মিছিল বের হয়ে শহীদ হাসান চত্বর পৌঁছুলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এ মিছিল থেকে পুলিশ জেলা যুবদলের সদস্য আরিফুজ্জামান পিন্টু, আবু সাঈদ ও জেলা ছাত্রদলের সদস্য তৌহিদুজ্জামান তৌহিদকে গ্রেফতার করে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সংবিধানের ষোড়শ সংশধনী বাতিলের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ কর্তৃক লাঠিচার্জ ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস। তিনি বলেন, যখন জেলাব্যাপি শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করেছে জেলাবাসী, ঠিক সে সময় কোনোরূপ অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটা সত্ত্বেও বিএনপি, যুবদল এবং ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার মুজিববাদী পুলিশের সৃষ্ট চক্রান্ত। দমননীতি যতো কঠিন হবে আমাদের আন্দোলন ততোটাই দুর্বার হবে। এ ধরনের হামলা মামলা দিয়ে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। তাই অবিলম্বে এ সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ এবং নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াহেদুজ্জামান বুলা স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের দাবিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি একটি পিকেটিং মিছিল বের করে। মিছিলটি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে শহীদ হাসান চত্বরে পৌঁছুলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় জেলা বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম রতন, আবু জাফর মন্টু, নাজমুস সালেহীন লিটন, সুশীল কুমার, রবিউল ইসলাম, যুবদল নেতা আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, ইমরুল হাসান জোয়ার্দ্দার মুকুল, আসাদুল হক বকুল, ওলামাদলের সভাপতি মো. ফজলুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মঞ্জুরুল জাহিদসহ অনেকে আহত হন। গ্রেফতার করা হয় জেলা যুবদলের সদস্য আরিফুজ্জামান পিন্টু, আবু সাঈদ ও জেলা ছাত্রদলের সদস্য তৌহিদুজ্জামান তৌহিদকে। পরে শহিদুল ইসলাম রতনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াহেদুজ্জামান বুলা বিনা কারণে পুলিশি লাঠিচার্জের নিন্দা জানান। সেই সাথে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফ-উজ্জামান সিজার ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ তালহাসহ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফ-উজ্জামান সিজার স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ওয়াহেদুজ্জামান বুলার নেতৃত্বে পিকেটিং করার সময় শহীদ হাসান চত্বরে পৌঁছুলে পুলিশ অতর্কিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপর লাঠিচার্জ করে। এ সময় নেতৃবৃন্দ আহত হন। চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সদস্য তৌহিদুজ্জামান তৌহিদ, যুবদল নেতা আরিফুজ্জামান পিন্টু ও সাঈদকে গ্রফতার করে। চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফ-উজ্জামান সিজার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ তালহা, ফিরোজ সরোয়ার রোমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মুঞ্জুরুল জাহিদ, জাহিদ আহমেদ রাজিব, মোমিনুর রহমান মোমিন ও সুজন মালিকসহ জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি প্রতিবাদলিপিতে আরো উল্লেখ করেন, ৫ জানুয়ারি তথাকথিত ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে এ অবৈধ সরকার জনগণের কাঁধের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে। এ সরকার বাকশালী কায়দায় ক্ষমতা পাকাপক্ত করার জন্য জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগকে অশুভ উদ্দেশে ব্যবহার করার জন্য এ আইন দ্বারা দেশের প্রধান নির্বাহী অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীকেই বিচার বিভাগের ওপর খবরদারি করার গ্যারান্টি নিশ্চিত হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আগামী দিনে যে কর্মসূচি দেবেন সে কর্মসূচিকে সফল করার জন্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। নির্যাতনের মাত্রা যতোই বাড়বে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা ততোই সুসংগঠিত হবে। চলমান আন্দোলন আরও বেগবান হবে। স্বৈরাচারের পতন এবং গণতন্ত্রের বিজয় অর্জিত হবেই হবে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, হরতাল মেহেরপুরে শুধুমাত্র আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকার মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে। তবে সকাল থেকে শহরের দোকান-পাট, অফিস-আদালত খোলা ছিলো। স্কুল-কলেজে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি ছিলো যথেষ্ট। ব্যাংক-বীমায় লেন-দেন ছিল স্বাভাবিক। হরতাল চলাকালে হরতালের পক্ষে বিপক্ষে কোনো মিছিল কিংবা পিকেটিং হয়নি। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে। মাঝে মধ্যে ৱ্যাবের টহল লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিএনপি-জামায়াতের ৭ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দিনগত রাতে মেহেরপুর জেলার তিন থানা পুলিশ ওই আটক অভিযান চালায়। আটককৃতরা হচ্ছেন- মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের জামায়াত কর্মী আব্দুস সালাম (৪২), বিএনপি কর্মী মুজিবনগর উপজেলার গৌরিনগর গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন (৩০), মেহেরপুর শহরের পৌর গোরস্থানপাড়ার ইমান আলী (৪৫), একই পাড়ার বাসিন্দা মেহেরপুর পৌর কাউন্সিলর কামরুল ইসলাম (৫২), গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়া (৪৭), পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের সোহেল রানা (৩২) এবং মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের চাঁদ আলী (৩০)। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময়ে হরতাল-অবরোধে সহিংসতার ঘটনার মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানান সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আতিয়ার রহমান। তাদেরকে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, হরতালের কারণে সকালে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা খুলেছে। শহরে হালকা যানবাহন চলাচল করলেও টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস। এছাড়া কোন পিকেটারকে মাঠে দেখা যায়নি। হরতালের সমর্থনে শহরে মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সোমবার সকাল ৯টার দিকে শহরের কেপি বসু সড়কের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। মিছিলে নেতৃত্ব নেতৃত্ব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি মসিউর রহমান। মিছিলটি শহরের পায়রা চত্ত্বর সহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে গীতাঞ্জলি সড়কে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলা থেকে হরতালে নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সকালে তাদের আটক করা হয়। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানকালে হরতালে নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে ২১ জন বিএনপি-জামায়াতকর্মীকে আটক করা হয়। এর মধ্যে জেলার সদর উপজেলা থেকে ৪ জন, শৈলকুপা উপজেলা থেকে ২ জন এবং বাকি ৪ উপজেলা থেকে ১৫ জন বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
হরিণাকুণ্ডু প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরতালের সমর্থনে হরিণাকুণ্ডুর কোথাও কোনো পিকেটিং সমাবেশ করতে দেখা যায়নি। সেই সাথে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ বা অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকেও হরতালে বিপক্ষে কোনো কর্মসূচিতে দেখা মেলেনি। হরিণাকুণ্ডু থেকে ঝিনাইদহগামী সড়কে কোনো বাস চলাচল না করলেও স্থানীয় নসিমন আলমসাধুতে করে লোকজনকে চলাচল করতে দেখা গেছে। ব্যাংক বীমায় লেনদেন অন্য দিনের চেয়ে কিছুটা কম হয়। তবে উপজেলা সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা চলার কারণে পরীক্ষার্থীরা যথারীতি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ব্যবসাবাণিজ্য বিপণী-বিতানগুলো খোলা থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিলো তুলনা মূলক কম।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় কুষ্টিয়া জেলা ২০ দলীয় জোটের আহ্বায়ক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি হরতাল সমর্থনে মিছিল বের করে। শহরের মজমপুর গেট থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি এনএস রোড হয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এদিকে হরতালের বিপক্ষে মিছিল ও সমাবেশ করেছে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগ। দুপুরে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলীর নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয় থেকে হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে অংশ নেয়া আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হরতালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নেতৃবৃন্দরা।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম বলেন, ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের আগে রোববার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের ৬ নেতাকর্মী, বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী ও অন্যান্য বিভিন্ন মামলার আসামিসহ মোট ৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। হরতালে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরতালে নাশকতা এড়াতে পুলিশ রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মাসুম বিল্লাহ শাহীনসহ বিএনপি-জামায়াতের ১৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। হরতালে অপ্রীতিকর তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
যশোর অফিস জানিয়েছে, সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হয়েছে। হরতালে পুলিশ বিএনপি ও জামায়াতের ৩৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। এদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের শ্যালক জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক শরফুদ্দৌলা ছটলুসহ বিএনপির ২৬ জন ও জামায়াতের ১০ জন নেতাকর্মী রয়েছেন।
সিলেট অফিস জানায়, সিলেটে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। যানবাহন চলাচল করলেও দোকান বন্ধ ছিলো। সকালে ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে বের করা মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। এরপর ব্যানার গুটিয়ে স্লোগান বন্ধ করে দেয় হরতালকারীরা।
রাজশাহী অফিস জানায়, রাজশাহীতে ২০ দলের হরতাল নিরুত্তাপ পালিত হয়েছে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কখনো গুঁড়িগুঁড়ি, আবার কখনো ভারী বৃষ্টির কারণে এমনিতে যানবাহন চলাচল ছিল কম। বৃষ্টির মধ্যেই হরতালের সমর্থনে সকাল সাতটায় নগরীর কাদিরগঞ্জ থেকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর ষষ্টীতলা, নিউমার্কেট, রাণীবাজার, গণকপাড়া ও সাহেব বাজার হয়ে ভুবনমোহন পার্কে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এদিকে রাজশাহী মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার তানভীর হায়দার চৌধুরী জানান, রবিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ১৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। এছাড়া মানিকগঞ্জের শিবালয়ে একজন ও লক্ষীপুরের কমলনগরে একজনকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম অফিস জানায়, সেখানে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই হরতাল পালিত হয়েছে। বন্দরের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক ছিল। তবে বন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরে কোন পণ্য পাঠানো যায়নি। মংলা সংবাদদাতা জানান, মংলা বন্দরে পণ্য উঠানামা স্বাভাবিক ছিল।
বরিশাল অফিস জানায়, হরতাল চলাকালে গতকাল সোমবার বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। সকাল ১১টায় হরতালের সমর্থনে জেলা ও মহানগর বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার ও জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চানের নেতৃত্বে মিছিলটি অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এসে সদর রোড অতিক্রমকালে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। পরে মিছিলটি নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশে করে।