স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পলাশপাড়ার শফিউল ইসলাম সুমনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ তার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। সুমন একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের প্রধান আসামি। গত ৫ মার্চ থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানায়।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পলাশপাড়ার আমিনুল ইসলাম খোকনের ছেলে শফিউল ইসলাম সুমনের সাথে ২০০৬ সালে বুজরুকগড়গড়ি গ্রামের নুরুল হুদার মেয়ে সেলিনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয় সেলিনাকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সেলিনার পিতা-মাতা জামাইকে ২ লাখ টাকা দেন। এরপরও তার নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সেলিনা-সুমনের সংসারে ৫ বছরের একটি কন্যাসন্তানও আছে। সম্প্রতি সুমন আরো ১ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে মারধর করে। এতে আহত হয়ে সেলিনা হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তিনি বাদী হয়ে গত ৫ মার্চ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে সুমনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গতকালই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হয়। সুমন দামুড়হুদা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের জুনিয়র অডিটর বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
স্টাফ রিপোর্টার: আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চযুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একটি কারখানার নারী শ্রমিকরা শ্রমঘণ্টা দৈনিক ১২ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ সুস্থ ওস্বাস্থ্যকর করার দাবি তোলেন। এর ঠিক তিন বছর পর ১৮৬০ সালে এদিনে গঠিতহয় প্রথম নারী শ্রমিক ইউনিয়ন। এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনেঅনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারাজেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘোষণা করেন। জাতিসংঘ ১৯৭৭ সালথেকে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়।এরপর থেকেই সারাবিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনহয়ে আসছে। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অগ্রগতির মূলকথা, নারীপুরুষ সমতা’। প্রতি বছর এমন নানা প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হয় দিনটি। সামনেএগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন আর প্রত্যাশা নিয়ে নারী নতুন করে শপথ নেন। প্রাপ্তি আরঅপ্রাপ্তির হিসাব কষে দেশের নারী সমাজ হতাশ হলেও এ সময়ে অনেক অর্জন তাদেরআরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। দেশেরপ্রধানমন্ত্রী, সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী, স্পিকার, সংসদ উপনেতার আসনেআছেন নারী। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বেও আছেন নারী।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, বিচারপতি, পাইলট, ট্রেনচালক হিসেবে নিজেদেরকৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন নারীরা। হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় পা রেখে নারীসমাজের মাথা উঁচু করেছেন বাংলাদেশের নারী। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলস্রোতেওরয়েছেন নারীরা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে অবদান পোশাক শিল্পের নারীদের। এতো হলোএদেশের নারীদের বিজয়ের গল্প। তবে এদেশের নারীদের পথচলা এখনও কণ্টকমুক্তনয়। সমাজে রয়েছে নারীর সুরক্ষার অভাব, নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য।প্রতিনিয়ত নারীরা হচ্ছে প্রতিহিংসার শিকার। মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী২০১৩ সালে নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪ হাজার ৭৭৭ জন। ঘরে-বাইরে নারীরামানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। এর মূল কারণ সমাজেরদৃষ্টিভঙ্গি বলে মনে করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুলহামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াপৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশেরন্যায় বাংলাদেশেও জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৪ যথাযোগ্যমর্যাদায় পালন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সব নারীকে জানাই আন্তরিকশুভেচ্ছা ও অভিবাদন। সভ্যতার শুরু থেকে সকল সৃজনশীল ও উন্নয়নমূলককর্মকাণ্ডে পুরুষের পাশাপাশি নারীসমাজ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছে।
বিশ্বেরসকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতেবলেন, আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণেরঅগ্রদূতদের, যাদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠায় নারীর সমঅধিকার এবং মর্যদাপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন আজ সর্বব্যাপি হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য বাংলাদেশেরআর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। এটিসমাজে নারীর অবস্থান আরও সুদৃঢ় করার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারেরপ্রতীক। নারীর ক্ষমতায়ন, সমতা এবং উন্নয়নের মূলধারায় পূর্ণ অংশগ্রহণনিশ্চিত করতে হবে। নারী দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে ১৯ দলীয় জোট নেত্রী ওবিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ওআত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীরঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নারীসমাজ যাতে অবহেলা, নির্যাতন ও নিপীড়নেরশিকার এবং ন্যায্য অধিকার থেকে তারা যাতে বঞ্চিত না হয় সেদিকে সবার সতর্কদৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারীসমাজের অগ্রগতি সাধিত হলে মানব প্রগতির সর্বাধিক বিকাশ সম্ভব হবে।