আলমডাঙ্গার মোনাকষায় জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের দু’পাড়ে উচ্ছেদ অভিযান
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের আলমডাঙ্গার মোনাকষা বাজারের ৮৬টি পাকা-আধাপাকা স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোডের ২য় পর্যায়ের উচ্ছেদ টিম। গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন ও চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুবীর কুমার ভট্টাচার্য্যরে নেতৃত্বে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে এসকেভেটর দিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়। অভিযানকালে ১ম পর্যায়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদস্থলে পুনরায় দখলের অপরাধে ২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা ও অন্যদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার জিকে সেচ প্রজেক্টের প্রধান খালের (কুমার নদ) দু’পাড়ে বিশেষ করে আলমডাঙ্গা শহর ও মোনাকষা বাজারে অবৈধ দখলদাররা দীর্ঘদিন নদের জমি দখল করে বসতি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। নদের শুধু আউট সাইডই নয়, ইনসাইডও দখল করে বসতি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে নদের বুকের মাটি উত্তোলন করে সেই মাটি তীরে ফেলে প্রতিনিয়ত নদের বুক ভরাট করে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলে নদীর প্রশস্ততা ও নাব্যতা ক্রমেই স্থিমিত হয়েছে। পরিস্থিত এমন ভয়াবহ হয়েছিলো যে, নদের পাড় দিয়ে দীর্ঘ ২ কিলোমিটার হেঁটে গেলেও নদের দেখা মিলতো না। এমন পরিস্থিতিতে ২৩ ডিসেম্বর সারা দেশে এক যোগে ৬৪ জেলায় অবৈধভাবে নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান শুরু ঘোষণা দেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আলমডাঙ্গার কুমার নদের দু’পাড়ের ২৮৪টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়। ওই অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ প্রদান করা হয়। বেঁধে দেয়া সময় সীমা শেষে পূর্ব ঘোষিত ২৩ ডিসেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর দু’পাড়ে থাকা আলমডাঙ্গার ২৮৪টি অবৈধ স্থাপনা ১ম পর্যায়ের উচ্ছেদ অভিযানে উচ্ছেদ করে।
এরপর গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী আলমডাঙ্গার মোনাকষা বাজারে ২য় পর্যায়ের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় অভিযান টিমের এসকেভেটর গুড়িয়ে দেয় মোনাকষা বাজারের জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের ওপর অবস্থিত ৮৬টি অবৈধ পাকা-আধাপাকা স্থাপনা।
চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম বলেন, কুমার নদের দু’পাড়ের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে দেয়া হবে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন জানান, জিকে সেচ প্রকল্পের প্রধান খালটি দখলমুক্ত করা হবে।
ইতোপূর্বে উচ্ছেদ অভিযানের পর আবার কীভাবে নদী দখল হলো এবং দীর্ঘদিন ধরে এতো বড় বড় পাকা স্থাপনা তৈরির সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড কী ভূমিকা পালন করেছিলো? “লোকবল স্বল্পতার কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।” নির্বাহী প্রকৌশলী উপরোক্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বলেছেন বলেন, নদী মাতৃক দেশের সমাজ-সভ্যতা গড়ে উঠেছে নদীকে কেন্দ্র করে। নদীগুলো দেশের সম্পদ। এ সম্পদ সকলের। দেশের নদী সম্পদকে রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের।
একই দিন অভিযান টিন প্রথম পর্যায়ের উচ্ছেদ অভিযানে আলমডাঙ্গা শহরের কুমার নদের পাড়ের উচ্ছেদকৃত অবৈধ স্থাপনাস্থল পুনরায় দখল করে ব্যবসা করার অপরাধে শাদা ব্রিজ মোড়ের ফলব্যবসায়ী টিপু সুলতান ও আনন্দধামের ফলব্যবসায়ী জুয়েল হোসেনকে জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদের সর্তক করে দেয়া হয়েছে। এসময় আলমডাঙ্গা থানার এসআই আশিকুল ইসলাম, এসআই আতিকুর রহমান জুয়েল, এসআই গোলাম মোস্তফা, এসআই গিয়াস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।