স্টফ রিপোর্টার: শিক্ষকে মানুষ গড়ার কারিগর বলা হলেও চুয়াডাঙ্গা সদর গিরীশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। ঘটেই চলেছে একের পর এক অঘটন। আবারও বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকের মধ্যে শিক্ষক সুলভ আচরণ না থাকায় অভিভাবকমহলে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীর পরিবার। সেই সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গিরীশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি নানাভাবে আলোচিত সমালোচিত হয়ে উঠেছে। একটি ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা সামনে চলে এসেছে। বিদ্যালয়ের আওতাধীন গোবরগাড়া গ্রামের বিল্লাল মহরি অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে শাহনেওয়াজ ৮ম শ্রেণির ছাত্র। গতকাল শনিবার দ্বিতীয় পিরিওডের সময় আমার ছেলেসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বাথরুম থেকে প্রসাব করে শ্রেণিকক্ষের পেছনের দরজা দিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে। এ সময় বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমানকে না বলে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের অপরাধে শাহনেওয়াজ, কালাচাঁদ, মারুফ ও প্রান্তকে দাঁড় করিয়ে লাঠি দিয়ে মারপিট করে। একজন শিক্ষক এভাবে ছাত্রকে মারপিট করতে পারে না। ছেলেকে নিয়ে আমি সভাপতি ও তিতুদহ ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। এর সুষ্ঠু বিচার না হলে আমি পরবর্তী পদক্ষেক গ্রহণ করবো। শাহনেওয়াজ জানায়, তাদেরকে হালকা-পাতলা মারধর করলেও আমাকে বেধড়ক মারপিট করে স্যার। কিছু বলার সুযোগই দেয়নি স্যার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ বলেন, শিক্ষার্থী বেয়াদবী করেছে তাই ওই শিক্ষক দুটি বেত্রাঘাত করেছে। আমি ওই ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বলে জানতে পারি বিষয়টি তেমন কিছু না। বিদ্যালয় ছুটি দেয়া পর্যন্ত কোনো অভিযোগই ছিলো না। পরে জানতে পারছি ওই শিক্ষার্থী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হায়দার বিডিয়ার বলেন, বিল্লাল মহরি তার ছেলেকে নিয়ে আমার কাছে এসেছিলো। আমি তার আঘাতের চিহ্নগুলো দেখেছি। আসলে মারটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে আগামী বুধবার শিক্ষক ও কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসা হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক জিয়াউর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে এলাকাবাস অভিযোগ করে জানায়, গিরীশনগর বিদ্যালয়ে একের পর এক অঘটন ঘটেই চলেছে। যার মধ্যে রয়েছে জুতো পায়ে শহীদ মিনারে ওঠা, উত্ত্যাক্ত করার অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা; সর্বশেষ শনিবার শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থী নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটলো। শিক্ষক হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর। সমাজে তাদের অবস্থান সবার উর্ধ্বে। সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষদের নিয়ে যখন একের পর এক প্রশ্ন ওঠে তখন সেখানে লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই আমাদের দাবি আলোচিত এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা যেন ফিরে আসে; সেজন্য কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।