জামজামি প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার নওদা পাঁচলিয়ায় সর্পদংশনে লালনভক্ত বাউলবধূ হাফেজার মৃত্যু হয়েছে। মধ্যরাতে ঘুম থেকে জেগে কিসে যেন তাকে কামড়ালো বলে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। এসময় পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে রক্ত পড়তে দেখে শক্ত করে বাঁধা হয়। বিছানার কম্বল উঠিয়ে দেখা মেলে আড়াই ফুট লম্বা কানন বুড়া সাপ। প্রতিবেশী এক যুবক সাপটি পিটিয়ে মারেন। তিনি জানান, ভক্ত বধূর প্রাণ বাঁচাতে তাৎক্ষনিক নেয়া হয় গ্রাম্য ওঝার কাছে। ঝাড়ফুঁক করে হাত চালান দিয়ে তিনি বলেন বিষ নেই। বাঁধন খুলে দিতে তৎপর হয়ে ওঠেন। এ ভ-ামি মেনে নেননি সর্পদংশনে শিকার বাউলবধূ। বুক ফেটে যাচ্ছে-শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে বলে যন্ত্রণায় কাতর হয়ে ওঠেন লালনভক্ত বাউলবধূ।
রাত ১টার দিকে তাকে আলমসাধুযোগে নেয়া হয় আলমডাঙ্গার হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরিবারের অভিযোগ এখানে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সর্পদংশনের রোগী ভর্তি নিতে অপারগতা জানান। রাতেই এ রোগীকে নেয়া হয় কুষ্টিয়া সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। জরুরি বিভাগে ভর্তি শেষে বেডে শোয়াতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বাউলবধূ হাফেজা। শেষরাতে এ লাশ মর্গে নিয়ে তালাবন্দি করা হয়। লাশ নিজেদের জিম্মায় পেতে তদবীরের অন্তহীন প্রচেষ্টায় দুপুর গড়ায়। অবশেষে লাশ পরিবারের জিম্বায় ছেড়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গ্রামে ফিরিয়ে আনা হলে তান্ত্রিক ওঝা লাশে জীবন ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাসে শুরু করে ঝাড়ফুঁক। স্বামীর ভিটে আলমডাঙ্গার খাসকররার হাকিমপুরের মৃত আমজের ফকিরের ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে চলছিলো তান্ত্রিকের ভ-ামি।
আলমডাঙ্গার জামজামির নওদা পাঁচলিয়ায় সাধুভক্ত মাতা জবেদার কাছে ভক্তি নিবেদনে এসেই রাতে সর্পদংশনের শিকার হয়ে মারা যান তিনি। সাধুমাতা জবেদার স্বামী মৃত মহর আলী শাহর কবরের পাশে কবর তৈরি হয়েছে। সাধুভক্ত অনুরাগীর উপস্থিতি ও শোকার্তদের আহাজারিতে এ আখড়া ভারি হয়ে উঠেছে।