মহেশপুরে দালালের খপ্পরে পড়ে এক যুবতীকে সৌদি আরবে পাচার : অমানুষিক নির্যাতনের শিকার

 

মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পীরগাছা গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের কন্যা শিল্পী খাতুন (ছদ্ম নাম) দালালের খপ্পরে পড়ে সৌদি আবরেব পাচার হয়ে অমানুষিক নির্যাতনের ৬ মাস পর অবশেষে প্রশাসনের সহযোগিতায় দেশে ফিরে এসেছে। পাচারকারী দলের হোতা সেলিম ওরফে কালু এখন মোবাইল ফোনে তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

জানা গেছে, মহেশপুর থানার পীরগাছা গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের যুবতী কন্যাকে (২০) একই গ্রামের সোহরাব মন্ডলের ছেলে সেলিম ওরফে কালু দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। অবশেষে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে ওই মেয়েকে ফরিদপুর নিয়ে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে তাকে বিয়ে করেন। সেই সাথে পীরগাছা মৌজার ৩৩ শতক ধানী জমি তার নামে ক্রয় করে দেয়। ওই মেয়ের কথিত স্বামী সেলিম ওরফে কালু ও একই গ্রামের ইউপি সদস্য আয়নাল হোসেনের যোগসাজসে গত বছরের ২৪ জুলাই সৌদিআরবে পাচার করে দেয়। সৌদিআরব পৌঁছে মেয়েটি জানতে পারে তার স্বামী সেলিম ওরফে কালু তাকে ভূয়া বিয়ে করেছে। শুধু তাই নয় সেলিম ও মেম্বার আয়নাল তাকে ৬ লক্ষ টাকায় একটি মানবপাচার চক্রের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। বিদেশ থেকে সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে জানতে পারে তার বিয়ের কাবিননামা ও রেজিষ্ট্রিকৃত জমির দলিলও ভূয়া। বিদেশে মানবপাচার চক্র তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। তাকে দিনের পর দিন দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করায়। এক পর্যায়ে শিল্পী খাতুন সৌদি আরবের নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে তার দুরাবস্থার কথা জানায়। সৌদি আরবের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বাংলাদেশে র‌্যাবের সাথে যোগাযোগ করে। বাংলাদেশের ঢাকাস্থ র‌্যাবের একটি টিম সরকারের মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে দেশে নিয়ে আসে এবং তার পরিবারকে খবর দেয়। কয়েক মাস আগে সে ঢাকায় বিমানবন্দরে আসলে তার বাবা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়ি আসার পর থেকে পাচারকারী চক্রের হোতা, সেলিম, আয়নাল ও মোস্তফা ওই মেয়ে ও তার পরিবারকে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। গত ১৯ মার্চ পাচারকারী দলের সদস্যরা ভিকটিমের বাড়ির বিচালী গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে মহেশপুর থানায় একটি জিডি করা হয়। এছাড়া তাদের বাড়ির কলাবাগান কেটে দেয় ও ধান ক্ষেতে বিষাক্ত ওষুধ স্প্রে করে নষ্ট করে দেয়। বুধবার সকালে মানবাধিকার সংগঠন আরডিসি’র সহযোগিতায় এ বিষয়ে মহেশপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মহেশপুর খানার অফিসার ইনচার্জ লস্কর জায়াদুল হক জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।