পাঁচ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১টিতে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী

জীবননগরের বাঁকা-রায়পুর ও হাসাদাহ এবং আলমডাঙ্গার নাগদাহ-আইলহাস ইউপিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন

স্টাফ রিপোর্টার: কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের হাসাদাহ, বাঁকা, রায়পুর আলমডাঙ্গার নাগদাহ ও আইলহাস ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যার পর বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম, আইলহাসে অ্যাড. আব্দুল মালেক, জীবননগরের হাসাদাহে রবিউল ইসলাম, বাঁকায় আব্দুল কাদের প্রধান ও রায়পুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুর রশীদ শাহ বেসরকারিভারে নির্বাচিত হয়েছেন। আলমডাঙ্গার আইলহাস ও জীবননগরের রায়পুরে পরাজিত প্রার্থীদের কয়েকজন অভিযোগ তুলে বলেছেন হুমকিধামকি ও বাঁধার মুখে ভোটাররা তাদের ভোট নির্বিঘেœ দিতে পারেননি। রায়পুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোট পোলের সংখ্যা দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, সকল জল্পনা-কল্পনা ও ধারনা-মন্তব্যের অবসান ঘটিয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ও আইলহাস দুটি ইউনিয়ন পরিষদেই বিজয় ছিনিয়ে নিলো আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী। নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ নৌকা প্রতীকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দলীয় প্রার্থী মোকলেছুর রহমান জোয়ার্দ্দার ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪২ ভোট। এছাড়া আইলহাস ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী অ্যাড. আব্দুল মালেক নৌকা প্রতীকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১শ’ ৪১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনাজ উদ্দীন বিশ্বাস চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪শ’ ৭২ ভোট। এছাড়া নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমঙ্গীর হোসেন ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৬ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবুল হোসেন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৫শ’ ৪ ভোট, জাকের পার্টির দলীয় প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম গোলাপফুল প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৩শ’ ৪৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী দারুস সালাম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৯শ’ ৬৩ ভোট। এছাড়া আইলহাস ইউনিয়ন পরিষদে বাকি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপি দলীয় প্রার্থী আব্দুল ওহাব ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৯শ’ ১৪ ভোট ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী রকিবুল হাসান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৮শ’ ১১ ভোট। আইলহাস ইউনিয়নে মোট ভোট সংখ্যা ১১হাজার ৯শ’ ৪১। পোলকৃত মোট ভোটের সংখ্যা ১০ হাজার ৪শ’ ৯৯, বৈধ ভোট সংখ্যা ১০ হাজার ৩শ’ ৩৮ এবং বাতিল ১৬১। শতকরা ৮৮ ভাগ ভোট পোল হয়েছে।
তাছাড়া আইলহাস ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে বক প্রতীকে সর্বাধিক ১হাজার ৮০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ফরিদা খাতুন, সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ডে মাইক প্রতীকে সর্বাধিক ১হাজার ৭০ ভোট পেয়ে সাগরী খাতুন ও সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ডে মাইক প্রতীকে সর্বাধিক ১হাজার ৪শ’ ২৯ ভোট পেয়ে উম্মে সালমা নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও সাধারণ আসনে সদস্য পদে ১নং সাধারণ ওয়ার্ডে টিউবওয়েল প্রতীকে সর্বাধিক ৪১১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বেল্টু মিয়া, ২নং সাধারণ ওয়ার্ডে ফুটবল প্রতীকে সর্বাধিক ৯২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন টিটম মিয়া। ৩নং সাধারণ ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই নির্বাচিত হয়েছেন। ৪নং সাধারণ ওয়ার্ডে বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে সর্বাধিক ৩২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আইনউদ্দীন হক। ৫নং সাধারণ ওয়ার্ডে ভ্যানগাড়ি প্রতীকে সর্বাধিক ৪২১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাইফুর রহমান। ৬নং সাধারণ ওয়ার্ডে ফুটবল প্রতীকে সর্বাধিক ৫৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আজিজ আহমেদ। ৭নং সাধারণ ওয়ার্ডে মোরগ প্রতীকে সর্বাধিক ৪৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বকতিয়ার হোসেন। ৮নং সাধারণ ওয়ার্ডে তালা প্রতীকে সর্বাধিক ৬১১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তারা চাঁদ মিয়া। ৯নং সাধারণ ওয়ার্ডে টিউবওয়েল প্রতীকে সর্বাধিক ১হাজার ২শ’ ৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ওল্টু মিয়া।
নাগদাহ ইউনিয়নে সংরক্ষিত আসনে সদস্য পদে ১নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সদস্য পদে কলম প্রতীকে সর্বোচ্চ ১হাজার ৩শ’ ৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন পারভীন খাতুন। ২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সদস্য পদে মাইক প্রতীকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ফুলছুরাতন। ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সদস্য পদে কলম প্রতীকে সর্বোচ্চ ৮৭৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তাবিদা খাতুন।
এছাড়া সাধারণ আসনে সদস্য পদে ১নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ প্রতীকে সর্বোচ্চ ৭৪৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন গোলাম সরোয়ার। ২নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে টিউবওয়েল প্রতীকে সর্বোচ্চ ৫৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন রনি মাহমুদ। ৩নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ প্রতীকে সর্বোচ্চ ৪৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বাহাদুর আলী। ৪নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ প্রতীকে সর্বোচ্চ ৬৩৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শাহিনুর আলম। ৫নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ প্রতীকে সর্বোচ্চ ৪১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শাহ জামাল। ৬নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে তালা প্রতীকে সর্বোচ্চ ৪৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ওহিদুল ইসলাম। ৭নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে টিউবওয়েল প্রতীকে সর্বোচ্চ ৪৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বোরহান উদ্দীন। ৮নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ প্রতীকে সর্বোচ্চ ৩২৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মতিয়ার রহমান ও ৯নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ প্রতীকে সর্বোচ্চ ৩৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ইমাদুল হক।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আব্দুল কাদের প্রধান ৬ হাজার ২৪১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত সমর্থিত মোটরসাইকেল প্রতীক মাও. হাফিজুর রহমান পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৪১ ভোট এবং বিএনপি সমর্থিত আবুল কাশেম মুন্সী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৮৯৯ ভোট। হাসাদাহ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের রবিউল ইসলাম ৫ হাজার ১৯৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সোহরাফ বিশ^াস চশমা প্রতীক পেয়েছেন ২ হাজার ৮৮৭ ভোট, বিএনপি সমর্থিত কামাল উদ্দীন সিদ্দীকি ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ২৯৮ ভোট এবং জামায়াত সমর্থিত মোটরসাইকেল প্রতীক মাও. সিরাজুল হক আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৫৮৬ ভোট। রায়পুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুর রশীদ শাহ আনারস প্রতীকে ২ হাজার ৯৪৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের তাহাজ্জত হোসেন পেয়েছেন ২ হাজার ৮৬৪ ভোট, বিএনপি সমর্থিত মতিয়ার রহমান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ২২৫ ভোট এবং জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত মোটরসাইকেল প্রতীক মাও. মোহাম্মদ আলী পেয়েছেন ১ হাজার ২৪ ভোট।