রহস্যাবৃত চিরকুটসহ অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধারের পর মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে

স্টাফ রিপোর্টার: রহস্যাবৃত চিরকুটসহ অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধারের পর মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিচয় মিললেও মৃত্যু রহস্যের জোট খোলেনি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মৃতদেহ গতকাল ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের চুয়াডাঙ্গা কমিটির মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গাস্থ জান্নাতুল মওলা কবরস্থানেই লাশ দাফন কাজ সম্পন্ন করা হতে পারে। মধ্যবয়সী ওই ব্যক্তির মৃতদেহ শনাক্তকারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয়দানকারিনী আনোয়ারা বেগম লাশ গ্রহণ করে নিজ এলাকায় নিয়ে দাফনে আর্থিক অক্ষমতা জানানোর প্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী সন্তানেরা খবর পেলে চিত্র কিছুটা পাল্টাতে পারে।
গতপরশু দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের অদুরবর্তী পুরাতন স্টেডিয়ামের পাশ থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আনুমানিক ৬০ বছর বয়সী অজ্ঞাত পরিচয়ের এক পুরুষের। ভর্তির ঘণ্টাখানেকের মাথায় মারা যান তিনি। তার পকেটে পাওয়া যায় চিরকুটসহ আইএফআইসি ব্যাংকের একটি এটিএম কার্ডসহ দুটি সিমকার্ড। তারই সূত্র ধরে পুলিশ খুঁজে পায় পরিচয় উন্মোচনের পথ। পেয়ে যায় তার এক স্ত্রীর ঠিকানাও। খবর পেয়ে রাজশাহী শারদার শিরল বাস্তুহারা টার্মিনালের পাশের আব্দুস সাত্তারের বাড়ির ভাড়াটিয়া আনোয়ারা বেগম। তিনি পুলিশের নিকট থেকে খবর পেয়ে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গায়। লাশ দেখে শনাক্ত করে বলেন, ‘এটাই আমার স্বামী ফজলুল রহমানের লাশ। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাগবাগ করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে মেরে ধরে কাঁথা-কম্বল নিয়ে সেখান থেকে রাস্তায় বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। শুনেছি ওনার প্রকৃত বাড়ি যশোরে। সেখানে নাকি প্রথম স্ত্রী ও তিন মেয়েসহ এক ছেলেও আছে। তবে এসব জেনেই কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছিলাম একজন রডমিস্ত্রি হিসেবে জানার পর।’
আনোয়ারা বেগম যে জাতীয় পরিচয়পত্র মেলে ধরেছেন, তাতে লেখা আছে ফজলুল রহমান, পিতা মৃত ইউসুপ আলী, মা মরহুমা মাছুমা বেগম। ঠিকানা- নূর মোহাম্মদ সড়ক, যশোর। তবে রাজশাহী সিটি কপোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবেও একটি নাগরিকত্ব সনদ সাথে এনেছেন আনোয়ারা বেগম। তাতে নাম ঠিকঠাক থাকলেও ঠিকানা আশকারপুর, শারদা, রাজশাহী।
পুলিশ বলেছে, চিরকুটের ভাষ্যমতে ফজলুল রহমান প্রথম সংসার ছেড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনের ওপর বিতৃষ্ণায় আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। এরপরও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে গতপরশু মারা যাওয়ার পর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নেয়া হয় মর্গে। সোমবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগম লাশ শনাক্ত করেছেন। লাশ গ্রহণে আর্থিকভাবে অক্ষমতার কথা জানানোর পর আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের চুয়াডাঙ্গার কমিটির মাধ্যমেই দাফনের প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। গতরাতে এই কমিটির এক সদস্যের বাড়িতেই আনোয়ারা বেগমকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। স্বামীর দাফন কাজ সম্পন্ন হলে আনোয়ারা রাজশাহী ফিরবেন বলে জানালেও প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান সম্পর্কে তিনি তেমন কিছুই বলতে পারেননি। বিস্তারিত ঠিকানাও জানানো হয়নি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও তার সন্তানেরা খবর পেলে লাশ যশোরের উদ্দেশে নিলে নিতেও পারে।

Leave a comment