ঝিনাইদহে বিএনপির মৃত নেতার নামে ২ মামলা!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের সদর উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের ইদ্রিস আলী। তিনি মারা গিয়েছেন ২০১৬ সালে। অথচ গত ৭ ফেব্রুয়ারি তার নামে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনায় দুটি মামলা দিয়েছে পুলিশ। সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা আলাউদ্দীনের দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপির পুরানো কমিটির সহসভাপতি ইদ্রিস আলীকে। তিনি এ মামলায় ২১ নম্বর আসামি। এছাড়া ৮ ফেব্রুয়ারি নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা বদিউর রহমানের দায়ের করা আরেকটি মামলাতেও ইদ্রিস আলীকে ১৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এমন ঘটনায় এলাকার অনেকেই অবাক হয়েছেন।
এ বিষয়ে ইদ্রিস আলীর ছেলে আহসান কবীর জানান, ‘আমার বাবা ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বিএনপির পুরানো সাবেক কমিটির সহসভাপতি ছিলেন।’ মৃত্যুর দুই বছর পর পিতার নাম মামলার এজাহারে দেখে তিনি বিস্মিত হন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাতলামারী পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিশেষ ক্ষমতা আইনে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮০-৯০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই ফজলুর রহমান বাদী হয়ে একই ধারায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা আলাউদ্দীন ৬২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪০-৫০ জন আসামি করে মামলা করেছেন। শেষে ৮ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা বদিউর রহমান ৭৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। সর্বশেষ দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপির প্রয়াত নেতা ইদ্রিস আলীকে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক জানান, জেলা, থানা ও পৌর বিএনপির বর্তমান কমিটিতে ইদ্রিস আলী নামে তাদের কোনো সহসভাপতি নেই। তবে পুরানো কমিটিতে নলডাঙ্গা গ্রামের মরহুম ইদ্রিস আলী ছিলো। তিনি আরও বলেন, ৩ বছর আগের পুরানো কমিটির অনেকের পদ পদবী দিয়ে মামলা করা হলেও বর্তমান কমিটিতে তাদের পদ পদবী ভিন্ন।
মৃত ব্যক্তির নামে মামলা রেকর্ড হওয়া নিয়ে বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা ও মামলার বাদী আলাউদ্দীন জানান, ‘গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যমতে ইদ্রিস আলীর নাম এসেছে। ইদ্রিস আলী মৃত হলে বিষয়টি ভুলের কারণে হয়েছে।’ আরেক মামলার বাদী নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা বদিউর রহমান জানান, তিনি মৃত হলে আদালতে লিখিত দিয়ে সংশোধন করা যাবে। এ বিষয়ে সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ বলেন, ‘ওটার তো কোনো ঠিকানা ছিলো না। পরে আমরা ঠিক করে দিয়েছি।’