বেগমপুর প্রতিনিধি: গত তিন দিনে চুয়াডাঙ্গা সদরের নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী মাস হিস্টিরিয়া রোগে আক্রান্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ভীতি কাটাতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৭দিনের জন্য বিদ্যালয় বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সাথে কবিরাজ এবং মিলাদ মাহফিলের ব্যবস্থাও নেয়া হবে বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিকা খাতুন, মনিরা খাতুন, রিয়া খাতুন, নাজমুল ইসলাম, ইমরান হোসেন, হুসাইন, জিনিয়া খাতুন, কুহেলী খাতুন, চান মিয়াসহ বেশ কিছু শিক্ষার্থী গতকাল রোববার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর আগে গত বুধবার ৯, বৃহস্পতিবার ২ ও শনিবার ১৮জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে অনেকেই জ্ঞানও হারিয়ে ফেলে। ছেলে-মেয়েদের এমন অবস্থা দেখে অনেক অভিভাবক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রাজ্জাক জানান, গতকাল রোববার শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জেলা এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়। খবর পেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু হাসান ও সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলী হোসেন বিদ্যালয়ে আসেন। চিকিৎসার পাশাপাশি অনেকেই কবিরাজের ঝাড়ফুঁক এবং দোয়া মাহলিফের ব্যবস্থা নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার ধরণ দেখে ডাক্তার আলী হোসেন শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরকে জানান, এটি একটি মাস হিস্টিরিয়ায় (গণহিস্টিরিয়া) মনস্তাত্মিক রোগ। ভয়ের কোনো কারণ নেই। মনের মধ্যে অজ্ঞাত ভয়ের কারণে এমনটি হয়ে থাকে। আবার একজন আক্রান্ত হলে তার দেখা দেখি অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে শরীরে স্যালাইন ও ঘুমানোর ব্যবস্থা করলেই ঠিক হয়ে যাবে। তাই আপাতত কয়েকদিন বিদ্যালয়ে পাঠদান থেকে ছেলে-মেয়েদের বিরত রাখাই ভালো। আক্রান্ত এক শিক্ষার্থী জানালেন, প্রথমে হাত-পা অবশ ও প্রচ- মাথাব্যথা পরে জ্ঞান হারিয়ে যায়, আবার বমি বমি ভাব হয়। একজন অভিভাবক জানালেন, আমার মেয়ের এমন হয়েছিলো। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তার নাকে নল দেয়ার কথা বলতেই আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে যায়। এটাতে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু হাসান বলেন, গত কয়েক দিনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে ৭ দিনের জন্য বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই সাথে যে শ্রেণিকক্ষে বিশেষ করে ৫ম শ্রেণির ক্লাসরুমটিকে অফিসকক্ষ এবং অফিসকক্ষকে শ্রেণিকক্ষ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।