কোনো শিশু যেন ভিটামিন এ ক্যাপসুল কার্যক্রমে বাদ না পড়ে

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনকালে বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের লাল রঙের জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়।
চুয়াডাঙ্গায় সকাল সাড়ে ৯ টায় পৌরসভা চত্বরে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু। উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র একরামুল হক মুক্তা, কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মনি, কাউন্সিলর রেজাউল করিম, কাউন্সিলর রাসেদুল ইসলাম, কাউন্সিলর আবুল হোসেন, মহিলা কাউন্সিলর সুলতান আরা রতœা, মহিলা কাউন্সিলর শাহিনা আক্তার, মহিলা কাউন্সিলর শেফালী খাতুন, ইপিআই সুপার ভাইজার আলী হোসেনসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ। ‘ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ান শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমান’ স্লোগানে এবার জেলায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সের ১৬ হাজার ৪০৭ জন শিশুকে ১টি নীল রঙের এবং ১ থেকে ৫ বছর বয়সের ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৯৭ জন শিশুকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ১টি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সংশ্লিষ্টরা জানায়, যদি কোনো শিশু গত ৪ মাসের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে থাকে তাহলে সে শিশুকে আর ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। কান্নারত অবস্থায় বা জোর করে শিশুকে খাওয়ানো যাবে না। কোনো শিশুকে আস্ত বা গোটা খাওয়ানো যাবে না। ক্যাপসুলের মুখ কাঁচি দিয়ে কেটে ক্যাপসুলের ভেতরের তরল টুকু খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, সরকার স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠাসহ সময়োপযোগী অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মীদেরকে আরও আন্তরিক হয়ে সেবা প্রদান করতে হবে। কোনো শিশু যেনো ভিটামিন এ ক্যাপসুল কার্যক্রমের বাইরে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, সারা দেশের ন্যায় আলমডাঙ্গা পৌরসভায় জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০১৭ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকালে আলমডাঙ্গা পৌরসভায় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ সদর উদ্দিন ভোলা, প্যানেল মেয়র-২ জহুরুল ইসলাম স্বপন, কাউন্সিলর আলাল উদ্দিন, কাউন্সিলর কাজী আলী আজগর সাচ্চু , কাউন্সিলর আব্দুল গাফ্ফার, কাউন্সিলর মতিয়ার রহমান ফারুক, কাউন্সিলর ফারুক হোসেন, কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম ও মামুন অর রশিদ হাসানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পৌর কর্মচারী আশরাফ আলী, বিল্লাল হোসেন, খন্দকার খাইরুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুর রানা, মোস্তাক আহমেদ, আব্দুর জব্বার লিপুসহ স্বাস্থ্য শাখার কর্মচারী ও পৌরসভার অন্যান্য কর্মচারীবৃন্দ। আলমডাঙ্গা পৌরসভার ২৪টি স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে, ৫টি ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র ও ১১টি অতিরিক্ত কেন্দ্রের ০৩ মোবাইল টিমে ১৩০ জন সেচ্ছাসেবক পৌরসভার সকল কর্মচারির মাধ্যমে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু ও ১ থেকে ৫ বছর বয়সী ৭০০১ জন শিশুর লক্ষ্যমাত্রায় ভিটামিন এ ক্যাম্পুল খাওয়ানো হয়। ক্যাম্পেইন পরিচালনায় পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকালে জীবননগর বাসস্ট্যান্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। সকাল ৮টায় জীবননগর বাসস্ট্যান্ডে পৌরসভার পক্ষ থেকে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের লাল রঙের জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকালে পৌর সচিব জায়েদ হোসেন, পৌর প্যানেল মেয়র সাইদুর রহমান, কাউন্সিলর আবুল কাশেম, আপিল মাহমুদ, হযরত আলী, মহিলা কাউন্সিলর মাহফুজা খাতুন বিউটি, পরিছন খাতুন, রিজিয়া খাতুন ও ভারপ্রাপ্ত পৌর সেনেটারি ইন্সপেক্টর জামাল উদ্দিনসহ পৌরসভার সকল কর্মকর্তা কর্মচারিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পৌর সূত্র জানায়, পৌরসভার ২৯ টি কেন্দ্রে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৩৮৬ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে ৩৭৫ শিশুকে ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৩ হাজার ২০২ শিশুকে শক্তিশালী ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে ৩ হাজার ১৫০ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, সারাদেশের ন্যায় দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভায় জাতীয় ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৌর শহরের ৯ টি ওয়ার্ডের ২৯টি টিকাদান সেন্টারে এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার শূন্য থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিলো ৪০০। তার মধ্যে ভিটামিন খাওয়ানো হয়েছে ৩৮২ শিশুকে। আর ১২ থেকে ৬ মাস বয়সী শিশুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩১৫০ শিশুর। এর মধ্যে ভিটামিন খাওয়ানো হয়েছে ৩০৬৮ শিশুকে। দর্শনা পৌরসভায় জাতীয় ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দর্শনা পৌরসভার টিকাদান সুপারভাইজার মো. আব্দুল মজিদ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস খাওয়ানো ক্যাম্পেইনের (২য় রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল কেন্দ্রে একটি শিশুকে ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ। সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ডা. জি.কে.এম সামসুজ্জামান। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার ৯৮০ টি কেন্দ্রে ৬৮ হাজার ৭১৬ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৮ হাজার ৭৯৩ জন শিশুকে নীল রংয়ের ক্যাপসুল ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৫৯ হাজার ৭২৩ জন শিশুকে লাল রংয়ের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. অলোক কুমার দাসসহ হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের আওতায় মুজিবনগর উপজেলায় শিশুদের ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। গতকাল শনিবার সকালে মানিকনগর দোয়াজ উদ্দীনের বাড়িতে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা আক্তার। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্ত ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল্লাহ মোরশেদ, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুল হাই প্রমূখ। উপজেলায় ১০৩ কেন্দ্রের মাধ্যমে ১০হাজার, ৪৬জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম।