স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো খালেদা জিয়ার উকিল নোটিস আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। একই সঙ্গে নোটিস প্রত্যাহার না করলে এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে ধানমন্ডিস্থ দলের নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়া আইনি নোটিস দিয়েছেন। আমরা আইনিভাবেই বিষয়টি মোকাবিলা করব।’ দলের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে সময় খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি দেশে-বিদেশে ফলাও করে প্রচার হচ্ছে, দুর্নীতির মামলায় তাদের শুনানি চলছে, ঠিক এই সময়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই খালেদা জিয়া আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন। তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। খালেদা জিয়াকে আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে এই আইনি নোটিস প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে, এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হাছান মাহমুদ জানান, ১২টি দেশে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের এক হাজার দুইশ কোটি মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ এসেছে। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের জন্য খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের অর্থ বিনিয়োগের যে অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কাছে কোনও তথ্যপ্রমাণ আছে কি না। এ প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের কাছে অবশ্যই তথ্যপ্রমাণ আছে। তাছাড়া বিভিন্ন অনলাইনে এই বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।’ এ সময় মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তথ্যপ্রমাণ ছাড়া ভিত্তিহীন কোনও তথ্য প্রচার করে না।’ এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘উকিল নোটিস এখনও আমাদের কাছে আসেনি। গণমাধ্যম থেকে আমরা নোটিসের বিষয়টি জেনেছি। নোটিশ পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ৩০ দিনের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আইনি নোটিস পাঠান। নোটিসে বলা হয়, ‘গত ৭ ডিসেম্বর গণভবনে মিডিয়া ব্রিফিংকালে আপনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু মানহানিকর বিবৃতি দিয়েছেন, যা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সম্প্রচারিত হয়েছে। এ ছাড়া দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন ও অনেক সামাজিক মিডিয়া আউটলেটে প্রচার হয়েছে। ব্রিফিংয়ে আপনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক বিবৃতি দিয়েছেন। আপনি বলেছেন যে সৌদি আরবে খালেদা জিয়া একটি শপিংমলের মালিক এবং সেখানে তার বিপুল সম্পদ রয়েছে। তিনি মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। আপনি তার ছেলেদের সম্পর্কেও কিছু মিথ্যা কথা বলেছেন। আপনি খালেদা জিয়া এবং তার ছেলেদের সম্পর্কে যে অভিযোগ এনেছেন তা সাজানো, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং বিদ্বেষমূলক।’ নোটিসের বিষয়ে গতকাল সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।