মহেশপুরে মোমেনা ক্লিনিকে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু

স্থানীয় জনতার ক্লিনিক ঘেরাও : মালিক আটক
মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুরে মোমেনা ক্লিনিকে প্রসূতি মায়ের করুণ মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা ক্লিনিক ঘেরাও করে ক্লিনিক মালিককে আটক করে পুলিশে সোপার্দ করে। হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের।
এলাকাবাসী ও থানাসূত্রে প্রকাশ, রোববার মধ্য রাতে উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের শাহ জামান কালুর স্ত্রীকে মোমেনা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ডাক্তার আশার কথা বলে দীর্ঘক্ষণ রেখে দেয়। প্রসূতি প্রসাব বেদনায় ছটফট করলেও তাকে অপারেশন বা সন্তান প্রসাবের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। অবশেষে ওই প্রসূতি ভোরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শ শ মানুষ ক্লিনিক ঘেরাও করে এবং ক্লিনিকের ম্যানেজার কাম মালিক মোমিনুর রহমান খোকনকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ভৈরবা ফাঁড়ির এসআই শরিফুল, এএসআই মিজান দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি খারাপ শুনে মহেশপুর থানার ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে কোটচাঁদপুর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে শান্ত করেন। এ বিষয়ে নিহতের স্বামী শাহ জামান কালু বাদী হয়ে প্রতারণা ও গাফিলতির কারণে হত্যার অভিযোগ এনে মহেশপুর থানায় একটি মামলা করেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, আসামি খোকন ইতঃপূর্বে ভৈরবা বাজারে জননী ক্লিনিক নামে একটি ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছিলেন। সেই ক্লিনিকে-২০১৫ সালে ৩ মাসের ব্যবধানে ১২ জন রোগীর করুণ মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে একাধিকবার তদন্ত হয়। তদন্তে ওই ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়। ক্লিনিকটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মোমিনুর রহমান খোকন ক্লিনিকের নাম পরিবর্তন করে মোমেনা ক্লিনিক নাম দিয়ে আবারও ব্যবসা চালু করে। মোমিনুর রহমান নিজেকে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দেন। মোমেনা ক্লিনিকে কোনো ডিপ্লোমা নার্স বা স্বার্বক্ষণিক কোনো ডাক্তার নেই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনিচ জানান, ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ আছে। তারা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেবেন। উল্লেখ্য মহেশপুরে এ ধরনের প্রায় ১৮টি অবৈধ ক্লিনিক রয়েছে। যেগুলো সিভিল সার্জন অফিস ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলমান রাখে। এ বছর একাধিক ক্লিনিকে প্রসূতি ও শিশুর মৃত্যু ঘটলেও তদন্ত পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। মৃত্যুর মিছিলে সংখ্যা বাড়লেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না।

Leave a comment