আলমডাঙ্গা ব্যুরো: প্রবাসী স্বামী ৩ বছর পর বাড়ি ফেরার ৩ মাসের মধ্যে স্ত্রী স্বপ্না খাতুন হলেন কন্যা সন্তানের মা। নবজাতকের পিতৃত্বের দায়িত্বভার নিতে স্বামী কিংবা প্রেমিক উভয়ের আপত্তিতে বিপাকে পড়েছেন স্বপ্না খাতুন।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আলতাফ আলী সাড়ে তিন বছর আগে খাসকররা গ্রামের মাঝেরপাড়ার সহিদুল ইসলামের মেয়ে স্বপ্নাকে বিয়ে করেন। বিয়ের তিন মাস পর তিনি মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তিন বছর পর আলতাফ বাড়িতে ফিরে এসে দেখতে পান তার স্ত্রী স্বপ্না সাত মাসের অন্তসত্ত্বা। বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ৩ মাস। এরই মধ্যে গত ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার স্বপ্নার প্রসব বেদনা উঠলে আলমডাঙ্গা ফাতেমা টাওয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিজারিয়ানের মাধ্যমে স্বপ্নার একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। স্বপ্নার প্রসব বেদনা থেকে শুরু করে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যা সন্তান জন্মের পুরো প্রক্রিয়া থেকে আলতাফ নিজেকে সরিয়ে রাখেন। মহাবিপাকে পড়া স্বপ্না গতকাল রাতেও শিশু কন্যাকে নিয়ে ফাতেমা টাওয়ার হাসপাতালের বেডে শুয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছিলো।
স্বপ্না খাতুনের সাথে কথা বলার সময় তিনি অকপটে জানান, বিয়ের তিনমাস পর তার স্বামী আলতাফ মালয়েশিয়ায় চলে যান। খেজুরতলা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সোহেল স্বামীর আত্মীয়তার সুযোগে তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো প্রায়। সে সময় সোহেলের জোরাজুরিতে তাদের মাঝে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। স্বামী বিদেশে চলে যাওয়ার ৬ মাসের মাথায় স্বপ্নার সাথে সোহেলের শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্বপ্না বেশীরভাগ সময় খাসকররা গ্রামে তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। সোহেল মাঝেমধ্যেই খাসকররা গ্রামে যেতেন। তারা দুজনে স্বপ্নার পিতার বাড়িতেই মেলামেশা করতেন। সোহেল মাসের পর মাস অবাধে স্বপ্নার দেহভোগ করতেন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। যে কারণে অন্তসত্ত্বা হলেও স্বপ্না পেটের বাচ্চাকে নষ্ট করেননি।
এর মধ্যে গত তিনমাস আগে আলতাফ হোসেন মালয়েশিয়া থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। স্বপ্না খাতুন স্বামীর সাথেই স্বাভাবিকভাবে অবস্থান শুরু করে। কিছুদিন পর স্বপ্নার অস্বাভাবিক শারীরিক গঠনে স্বামী প্রশ্ন তোলেন। এ সময় স্বপ্না ও সোহেল বিপদে পড়ে যায়। সোহেল স্বপ্নাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে প্রসাব পরীক্ষা করান। এতে পেটে বাচ্চার অস্তিত্ব ধরা পড়ে। কিন্ত স্বপ্না তার স্বামীকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জানান যে, তার পেটে দেড় মাসের সন্তান রয়েছে।
কিন্তু ১৫ দিন পর স্বপ্নার প্রসব বেদনা উঠলে সব ওলোটপালট হয়ে যায়। গত শনিবার দুপুরে স্বপ্নাকে নেয়া হয় আলমডাঙ্গার ফাতেমা টাওয়ার হাসপাতালে। এরপর সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আলতাফ ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর স্বপ্নাকে ঘরে তুলবেন না। এদিকে, স্বপ্নার পরকীয় প্রেমিক সোহেলও জানিয়ে দিয়েছেন স্বপ্নার জন্ম দেয়া কন্যা সন্তান তার না। একুল-ওকুল দুকুল হারানো স্বপ্না খাতুন এখন পড়েছেন মহাপাথারে। স্বপ্নার দাবি সোহেলের বিয়ের প্রতিশ্রুতির কারণে সে তার সাথে শারীরিক মেলামেশা করেছেন। সন্তানের অস্তিত্ব জানার পরও দুজনে যুক্তি করে সন্তান রেখেছেন। এখন তবে অস্বীকার করছে কেন?প্রয়োজনে সোহেলকে পেতে আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান স্বপ্না খাতুন। এ ব্যাপারে কথা বলতে সোহেলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন বলে গ্রামসূত্রে জানা গেছে।