সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নজরুলই প্রেরণার উৎস

 

জাতিয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত

কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও জীবননগরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪১তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে। কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালন করা হয়েছে। মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনাসভা, দোয়া মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কাজী নজরুলের স্মৃতি বিজড়িত আটচালা ঘরের পাশে স্মৃতি ফলকে পুষ্প অর্পণ করা হয়। এরপর বেলা ৪টায় কার্পাসডাঙ্গা হাদিকাতুল উলুম বালিকা মাদরাসার সুপার নুরুল আমিন কাজী নজরুল ইসলামের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া পাঠ করেন। বেলা সাড়ে ৪টার দিকে কার্পাসডাঙ্গা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সভা কক্ষে কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের আয়োজনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি এমএ গফুরের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথী হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু। আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজির আহম্মেদ, কবি মুর্শেদ আলী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফাজ উদ্দিন, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা সাজেদুল বিশ্বাস মিঠু, নজরুল স্মৃতি সংসদের যুগ্মসম্পাদক কামরুজ্জামান রানা, শিক্ষক আব্দুল হামিদ, শিক্ষক আলমগীর হোসেন, শিক্ষিক আকলিমা খাতুন প্রমুখ। এরপর শিশুদের কবিতা আবৃতির আয়োজন করা হয়। পরে কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদ শিল্পী গোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নজরুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪১তম প্রয়াণ দিবস জীবননগরে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে জীবননগর সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ডের মুক্তমঞ্চে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। সাহিত্য পরিষদের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমলের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেমিল রেজা। আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর। প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফ। এছাড়াও আলোচনা করেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম, সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান ও আজিজ হোসেন প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক সংসদের আয়োজনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪১তম প্রয়াণ দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে কবির জীবন ও সাহিত্য-সঙ্গীত নিয়ে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি আশরাফুল হক লুলুর সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মন্টু, সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম আজম, কলাকেন্দ্রের সভাপতি ইকবাল হোসেন, শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম সাগর, প্রভাষক আসিফ জাহান, সাংবাদিক রহমান মুকুল, প্রশান্ত বিশ্বাস, ফিরোজ ইফতেখার, কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যক্ষ শামীম রেজা, আতিকুর রহমান ফরায়েজী, গল্পকার পিন্টু রহমান, শাহাবুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন মাস্টার।

এ সময় বক্তাগণ বলেন, জাতীয় কবিকে নিয়ে বেশিরভাগ মানুষ অত্যুৎসুক। তাদের মাঝে অসম্ভব জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে, তাকে ঘিরে এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীর কষ্টদায়ক বিমুখতা রয়েছে।’ ৪৭ সালে সৃষ্ট সদ্য পাকিস্তানের নজরুল ছিলেন আদর্শ। আবার ৭১ সালে সৃষ্ট স্বাধীন সার্বোভৌম বাংলাদেশে সৃষ্টিতেও উদ্দীপক-সন্দীপক ছিলো তার কবিতা ও গান। প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশ এই দুই বিরোধী আদর্শের রাষ্ট্রেও তিনি সন্মানিত ছিলেন। সন্মানিত ছিলেন এই জন্য যে তার রচনাতে দুই বিরোধী আদর্শের উজ্জ্বল উপকরণ ছিলো। আসলে তিনি ছিলেন দশ আয়তনবান কবি। যার একেকটি আয়তন নিয়ে একেকটি রাষ্ট্র কিংবা জনগোষ্ঠী মুগ্ধ থাকতে পারে। নজরুল ছিলেন সত্যিকার অর্থে উত্তররৈবিক কবি।

মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক সংসদের সাংগঠণিক সম্পাদক ডাক্তার আতিক বিশ্বাসের উপস্থাপনায় সঙ্গীত পরিবশন করেন শিল্পী কমল কান্তি চক্রবর্তী, রেজাউল হক, এসআই মিজানুর রহমান, সুশিল কর্মকার ও তুষার। কবিতা পাঠ করেন তবিবুর রহমান মাস্টার, আশরাফুল হক পান্না মাস্টার, কাজল ইসলাম, স্বপন আলী প্রমুখ।

 

 

Leave a comment