দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার কাদিপুরে পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে বোমা রেখে ফাঁসানোর অপচেষ্টাকারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তথ্য দেয়ার সময় পুলিশ মোবাইলফোনে রেকর্ডকৃত কথোপকথন গ্রামাবাসীকে কণ্ঠস্বর শোনানোর পর তার পরিচয় উন্মোচিত হয়ে পড়ে। সে কাদিপুর গাংপাড়ার গরুব্যবসায়ী কাসেদ। ওই কাসেদই ডালিমের বাড়িতে বোমাগুলো রেখে পুলিশকে সংবাদ দিয়েছিলো। পুলিশ বর্তমানে তাকে খুঁজছে। এ ঘটনায় মামলারও প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার কাদিপুর গাংপাড়ার গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে গরুব্যবসায়ী কাসেদ আলী (৪৫) ব্যবসার অজুহাতে মাঝেমধ্যেই একই গ্রামের গফুর মণ্ডলের ছেলে ডালিমের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে কাসেদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ডালিমের স্ত্রী রোজিনার ওপর। তারপর থেকে কাসেদ ডালিমের স্ত্রীকে প্রায় কুপ্রস্তাব দেয়ার পাশাপাশি নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো। এরই এক পর্যায়ে গত ১২ মার্চ রাতে ডালিমের অনুপস্থিতিতে কাসেদ ডালিমের বাড়িতে যায় এবং ডালিমের স্ত্রীকে চেপে ধরে শ্লীলতাহানি করে। এ সময় ডালিমের স্ত্রী রোজিনার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে কাসেদকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে ছেড়ে দেয়। এ সংক্রান্তে ডালিম বাদী হয়ে পরদিন কাসেদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা থেকে বাঁচতে কাসেদও আদালতে একটি মিথ্যা ছিনতাই মামলা দায়ের করে। ওই ঘটনার জের ধরে প্রতিপক্ষ ডালিমের পরিবারকে ফাঁসাতে লম্পট কাসেদ গত সোমবার রাতে ডালিমদের বাড়ির রান্নাঘরের মধ্যে ৪টি বোমা রেখে আসে এবং বিষয়টি মোবাইলফোনে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই সুব্রত বিশ্বাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কাদিপুর গাংপাড়ায় পৌঁছায়। এরপর কাসেদ মোবাইলফোনে এসআই সুব্রত বিশ্বাসকে ডালিমের বাড়ির লোকেশন জানায় এবং বলে ডালিমের রান্নাঘরের মধ্যে বোমাগুলো আছে। পুলিশ ডালিমের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং ওই রান্নাঘরের সামনে বোমার পাশেই ঘুমিয়ে থাকা ডালিমের বৃদ্ধ মা-বাবাকে ডেকে তোলেন। পরে রান্নাঘরের মধ্য থেকে রেখে যাওয়া ওই ৪টি বোমা উদ্ধার করে।
বোমাগুলো উদ্ধারের পর বিষয়টি নিয়ে পুলিশের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হলে এসআই সুব্রত তার মোবাইলফোনে রেকর্ডকৃত কথোপকথন ওই গ্রামের মেম্বার শাহজামালসহ স্থানীয় লোকজনকে শোনান। মোবাইলে রেকর্ডকৃত কথাগুলো শোনার পর কণ্ঠস্বর বুঝে তারা পুলিশকে জানায় এটা এই গ্রামের গরুব্যবসায়ী কাসেদের কণ্ঠ। পুলিশ তাৎক্ষণিক কাসেদের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় কাসেদ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোবাইলফোন বন্ধ করে সটকে পড়ে।
এ বিষয়ে এসআই সুব্রত বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মোবাইলফোনে বিষয়টি জানানো পর ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং ৪টি বোমাও উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে মনে হয়েছে এটা প্রতিপক্ষের সাজানো ঘটনা। সংবাদদাতার ওই নম্বরে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার কণ্ঠস্বর স্থানীয় লোকজনকে শোনানোর পর স্থানীয় লোকজন জানায় ওই কণ্ঠস্বর কাসেদের। তাকে ধরতে অভিযান অব্যহত রাখা হয়েছে। সেই সাথে তার নামে মামলারও প্রস্তুতি চলছে।