হাসেম রেজা: স্বল্প খরচে অল্প পরিশ্রমে ভুট্টা চাষে লাভবান হওয়ায় দামুড়হুদা উপজেলায় ভুট্টা চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। ভুট্টা ক্ষেতে সবুজ পাতার ফাঁকে ভুট্টাগাছে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। এটা দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। তবে দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। এবার উপজেলার অনেক কৃষক কৃষি অধিদফতরের সহযোগিতা নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছেন নিজেদের জমিতে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরসূত্রে জানা গেছে, এবার ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার হেক্টর জমি। তবে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনিরুজামান। তিনি জানান, স্বল্প সময় ও কম খরচে ভুট্টা চাষে লাভবান হওয়ার পরামর্শ পেয়ে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। এবার অনেক আগ্রহী ভুট্টাচাষিকে সরকারি প্রণোদনা ও সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এবারের রবি মরসুমে উপজেলার দর্শনা পৌরসভা, কুড়–লগাছি, কার্পাসডাঙ্গা, পারকৃষ্ণপুর-মদনা, নতিপোতা, নাটুদাহ, হাউলী, জুড়ানপুর, দামুড়হুদা ইউনিয়নে ভুট্টা চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ভুট্টা ক্ষেতে ফলন আসতে শুরু করেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। কুড়–লগাছি ইউনিয়ন চাষি ইউসুপ আলী গত বেশ কয়েক বছর ভুট্টার দাম ভালো হওয়ার কারণে এ বছর চার একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে এবার ভুট্টা চাষ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, সবমিলিয়ে ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে চার একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ভালো ফলনও আসতে শুরু করেছে। আশা করছি, তিনগুণ লাভ হবে এবারের ভুট্টা চাষে। যদি আশানুরূপ ফলন হয় তবে আগামীতে ৮ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করবো। ভুট্টাচাষি হাসান মাষাটার বলেন, ধান চাষে ব্যয় বেশি হওয়ায় খরচের সঙ্গে ফলনের মিল থাকে না। তাই ভুট্টা চাষ করেছি। তবে মাড়াই যন্ত্র না থাকায় ভুট্টা চাষ করে বিপাকে পড়তে হয়। সরকারিভাবে যদি কৃষকদের মাড়াই যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে কৃষকরা উপকৃত হবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান জানান, ভুট্টা চাষের জন্য দামুড়হুদা উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া অত্যন্ত উপযোগী। পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করে স্বল্প সময় অল্প পরিশ্রমে লাভবান হওয়া যায়। দামুড়হুদা উপজেলায় এ বছর ১৪ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে চাষ ভুট্টার চাষ হয়েছে। বর্তমানে ভুট্টা প্রতিমণ বাজারে ৬০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এ দাম থাকলে বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকায় ভুট্টা বিক্রি করতে পারবে। এছাড়া ভুট্টা গাছ গোখাদ্য ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, সনাতনী পদ্ধতিতে তারা ভুট্টা মাড়াই করছেন। যদি ভুট্টার মাড়াই যন্ত্র কৃষকরা পান, তাহলে আরও লাভবান হবেন।