দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার মদনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফিট্টুর কাছে প্রাইভেট না পড়ার অপরাধে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে শিক্ষকের বিরুদ্ধে সত্যতা মিলেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক ফিট্টুকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। ফিট্টুর শাস্তির দাবিতে অনড় রয়েছে গ্রামবাসী। শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া যেনো বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দর্শনাসহ আশপাশ এলাকার প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানো যেন পুজিতে পরিণত করেছে। স্কুলে পড়ানোর চেয়ে প্রাইভেট পড়ানোতে অতি আগ্রহী হয়ে পড়েছেন অতিলোভী এক শ্রেণির শিক্ষক। প্রাইভেট পড়তে হবে বাধ্যতামূলক, অন্যথায় বহু শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করানোর নজিরও রয়েছে কিছু অসাধু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। প্রাইভেট পড়িয়ে বেশ কয়েকজন আলোচিত শিক্ষক রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। সরকারের নিষেধাজ্ঞা তাদের কাছে যেনো থোড়ায় কেয়ার? কে দেখবে শিক্ষার্থীদের এ দুর্দশা শিক্ষকদের কাছে জিম্মি এখন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রতিকারের দাবি যখন সর্বমহলের ঠিক তখনই ঘটলো দামুড়হুদার মদনায় অঘটন। দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের মদনা স্কুলপাড়ার জয়নাল আবেদীনের ছেলে মদনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র রিমন হোসেন মাস কয়েক আগে প্রাইভেট পড়তো ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসানুজ্জামান ফিট্টুর কাছে। হঠাৎ করেই ফিট্টুর কাছে প্রাইভেট না পড়ার কারণে রিমনের ওপর ক্ষ্যাপা ছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি রোববার বিদ্যালয়ে রিমনকে একা পেয়ে বেধরকভাবে মারধর করেন শিক্ষক ভুট্ট। যা বিদ্যালয়ের গোপন ক্যামারায় ধারণ করা ছিলো। এ ঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ করা হলে আজ নয় কাল বলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে রিমনের অভিভাবকদের ঘোরানো হয়। এক পর্যায়ে ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার বেলা ১১ টার দিকে গ্রামবাসী শিক্ষক ফিট্টুর শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয় ঘেরাও করে। গ্রামবাসীর চাপের মুখে পরিচালনা কমিটি জরুরি বৈঠক করতে বাধ্য হয়। বৈঠকে ঘটনাটি তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয় রফিকুল ইসলাম বিশ্বাসকে। ১৩ কার্যদিবস তদন্ত শেষে গতকাল মঙ্গলবার লিখিতভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরিচালনা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বেলা ১১ টার দিকে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে ফিট্টুর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তাকে ইতোমধ্যেই কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশে জবাবের পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে সুপারিশ করা হতে পারে। এদিকে ফিট্টুর কঠোর শাস্তির দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছে গ্রামবাসী।