স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকার আমিন ফার্মেসির বিরুদ্ধে ৪ টাকা দামের ইনজেকশন ৫০ টাকায় বিক্রির অভিযোগ করা হয়েছে। গত পরশু রোববার রাত ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল গেটের সামনে মেসার্স আমিন ফার্মেসিতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনদের সাথে ফার্মেসি মালিকের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে দোকান বন্ধ করে সটকে পড়ে ফার্মেসি মালিকসহ কর্মচারীরা। পরদিন (গতকাল সোমবার) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ফার্মেসি মালিক ডা. জেড এম রওশন আমিন রতনকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রোগীর নিকট আত্মীয় সুমন অভিযোগ করে বলেন, গত রোববার রাতে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ফার্মপাড়ার আব্দুস সালামের ছেলে শান্তকে অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে চিকিৎসক তাকে সেডিল ইনজেকশন লিখে দেন। শান্তর সাথে থাকা তার আত্মীয় সুমন ওই ইনজেকশন আনতে সদর হাসপাতাল গেটের সামনে আমিন ফার্মেসিতে যায়। সেখানে সেডিল ইনজেকশন না থাকায় তারা সুমনকে ইজিয়াম নামের একটি ইনজেকশন দেয় যার বিক্রি মূল্য ৪ টাকা। আমিন ফার্মেসির কর্মচারীরা সুমনের কাছ থেকে ওই ইনজেকশনের দাম ৫০ টাকা নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন প্রতিবাদ করায় উভয়ের মধ্যে বাগবিত-ার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে আমিন ফার্মেসির মালিক ডা. জেডএম রওশন আমিন রতন ও তার দোকানের কর্মচারীরা দোকান বন্ধ করে সটকে পড়ে। এ ঘটনায় হাসপাতাল এলাকাজুড়ে সমালচনার ঝড় ওঠে। অনেকে বলতে থাকে এটা একটা প্রতারণা। এ ধরনের প্রতারকের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। ইজিয়াম ইনজেকশনের ব্যাপারে আশপশের একাধিক ওষুধ ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ইনজেকশনের বিক্রি মূল্য সর্বোচ্চ ৪ টাকা।
এদিকে ৪ টাকা মূল্যের ওষুধ ৫০ টাকায় বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ফার্মেসি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান লাভলু বলেন, আমরা প্রতিটা ফার্মেসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। আমিন ফার্মেসির মালিক যদি ৪ টাকা মূল্যের একটা ইজিয়াম ইনজেকশন ৫০ টাকায় বিক্রি করে থাকে; তাহলে তিনি অবশ্যই বড় ধরনের অপরাধ করেছে। আমাদের কাছে যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ কেউ করেন তাহলে আমরা ওই ফার্মেসির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এদিকে, ওষুধ বিক্রির বিষয়টি পরদিন জানা জানি হলে গতকাল সোমবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সেখানে অভিযান চালান। এ সময় অতিরিক্ত মূল্যে ধার্য করে ওষুধ বিক্রির দায়ে ভোক্তাঅধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারায় আমিন ফার্মেসির মালিক ডা.জেডএম রওশন আমিন রতনকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রম্যমাণ আদালতের বেঞ্চসহকারী হিসাবে ছিলেন সুবহান আলী।