সম্মিলিত প্রয়াস : ভূবনভরা আনন্দ আর বাধভাঙা উল্লাস
স্টাফ রিপোর্টার: আনন্দ। মুঠো মুঠো আনন্দ। নানা মুঠো মুঠো নয়, হাঁড়ি হাঁড়ি। তা হবে কেন? চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের আনন্দভ্রমণে আনন্দ ছিলো ভূবনভরা। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের বার্ষিক আনন্দভ্রমণ উপলক্ষে আয়োজিত রকমারি অনুষ্ঠানমালা ঝিনাইদহের জোহান ড্রীমভেলি পার্কে বয়ে দিয়েছে উৎসবের আমেজ। এ আমেজকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের প্রেরিত বিশেষ উপহার।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব প্রতিবছরের মতো এবারও স্বপরিবারে আনন্দ ভ্রমণে বের হয়। এবারের ভেন্যু ছিলো ড্রীমভেলি পার্ক। প্রায় সকল সদস্যের স্বপরিবারে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সকলেরই দৃষ্টিকাড়ে। প্রথমপর্বে যখন সদস্যরা তাদের স্ত্রী সন্তানকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বাড়িতে স্ত্রীকে কি বলে ডাকেন তা সবার সামনে নতুন করে তুলে ধরেন; তখন অট্টহাসির ঝড় যেন এনে দেয় সবার হৃদয়ে ফাগুন। পাশের গাছের পাতাও ঝরে স্বাগত জানায় সকলকে। অভিনন্দনের বন্যা বয়ে যায়। শুধুু কি প্রেসক্লাব সদস্য? ক্লাবের দাতা সদস্যদের অনেকেই এবারের আনন্দভ্রমণ সফল করতে নানাভাবে উৎসাহিত করেন। আনন্দভ্রমণের আয়োজনে আমন্ত্রিতদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার অন্যতম শিক্ষানুরাগী আলোকিত মানুষ সরোজগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রাণপুরুষ মো. আব্দুল্লা শেখ উপস্থিত হয়ে যেমন দাতা সদস্য হওয়ার ঘোষণা দেন। তেমনই বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিঙ্গাপুর প্রবাসী চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্য অকৃত্রিম বন্ধু আরিফুজ্জামান আরিফ সিঙ্গাপুর থেকেই চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দাতা সদস্য হওয়ার ঘোষণা দেন। একই সাথে তিনি সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটকেও আর্থিক সহযোগিতা করে সাংগঠনিক কর্মকা-কে বেগবান করার খোরাক জোগান। এছাড়া অন্যতম দাতা সদস্য মনিরুজ্জামান মনির এবারের আনন্দভ্রমণে অংশ নেন এবং আগামীতে সন্তান ও স্ত্রীসহ পিতা-মাতাকে নিয়ে এ ধরনের আয়োজন করার প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানিয়ে বড় ধরনের আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে গিয়ে দাতা সদস্য তৌহিদ হোসেন এবারের আয়োজনকে অনন্য দৃষ্টান্তবলে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সত্যিই অনুকরণীয় একটি সংগঠন। অভিবাদন নেতৃবৃন্দসহ সকলকে।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের অন্যতম দাতা সদস্য চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার স্বপরিবারে আনন্দভ্রমণে উপস্থিত থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারলেও বারবার ফোনে খোঁজখবর রাখেন। আনন্দভ্রমণ সফল করতে তার সার্বিক সহযোগিতা তো ছিলোই। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগর টগর, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবুর সহযোগিতাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা হয়। এছাড়া দাতা সদস্য মালিক হাফিজুর রহমান বাবু, দাতা সদস্য ঢাকার বাসিন্দা সাংবাদিক আহমেদ পিপুল, দাতা সদস্য সুরেশ কুমারসহ আনন্দভ্রমণকে পূর্ণতা দিতে যেভাবে পাশে থেকেছেন তা অনিস্বীকার্য। আর কিশোর কুমার কু-ু? তিনি তো প্রেসক্লাবের দাতা সদস্য হিসেবে অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে সব সময়ই থাকেন পাশে। এ উৎসবে তারও স্বপরিবারে উপস্থিত সকলকে উৎসাহিত করেছে। সকলকে পাশে পেয়ে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বলেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সকল সদস্য ঐক্যবদ্ধভাবে পথ চললে আগামীদিনগুলো আরো সুন্দর হতে বাধ্য। সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছিলো বলেই আজ ভূবনভরা আনন্দ আর বাধভাঙা উল্লাস আমাদের সামনে এসেছে। আমাদের সকলকেই ভাসাচ্ছে আনন্দের বন্যায়। তিনি সকলকে একে অপরের প্রতি আরও বেশি বেশি আন্তরিক হওয়ার পুনঃপুন অনুরোধ জানান। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের নামও কৃতজ্ঞচিত্তে উল্লেখ করেন তিনি। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য নাজমুল হক স্বপনসহ অনেকে।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের এবারের আনন্দভ্রমণ প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সেক্রেটারি বিপুল আশরাফ। সহকর্মীদের সাথে নিয়ে আনন্দভ্রমণকে সফল করে তোলায় তাকেসহ আহ্বায়ক কমিটির সকলকে অভিনন্দিত করেন প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি। র্যাফেল ড্রর পুরস্কারসহ পুলিশ সুপারের বিশেষ উপহার সকলের হাতে তুলে দেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দসহ পুলিশ সুপারের দুজন প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা ডিআই-১ মহাবুবুর রহমান ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তদন্ত লুৎফুল কবির। আনন্দভ্রমণের সমাপনীতে সদস্যদের স্ত্রীদের মধ্যে চেয়ার দখল প্রতিযোগিতা বাড়তি আনন্দ এনে দেয়। টান টান উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার জিতে নেন সাংবাদিক শামীম রেজার স্ত্রী। র্যাফেল ড্রসহ সকল অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন পর্যায়ক্রমে সকলে। বিশেষ করে ক্লাবের সহসাধারণ সম্পাদক ইসলাম রকিবের ধারাভাষ্যের ঢঙে প্রাণবন্ত উপস্থাপনার মাঝে কৌতুক করে আনন্দর বাড়তি খোরাক জোগান সাংবাদিক এমএ মামুন। সব মিলিয়ে উৎসবের দিনটি যেন চোখের পলকেই চলে গেলো। চলে যাওয়া দিনকে অভিজ্ঞতা হিসেবে নিয়ে সামনের দিনে আরও সুন্দর কিছু করার ইচ্ছে ব্যক্ত করার পাশাপাশি প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এবারের আয়োজনকে সফল করায় সকলের প্রতি পুনরায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।