স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় একটি বন্য মেছো বাঘকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সদর উপজেলার গাইদঘাটে কয়েকজন যুবক মেছো বাঘটি লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করার পর তীর ধনুক দিয়ে হত্যা করে। পরে মৃত মেছো বাঘটি নিয়ে উল্লাসও করে তারা।
গাইদঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বখতিয়ার হামিদ বলেন অনেকদিন ধরেই বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি সময়ে কিছু উঠতি বয়সের ছেলেরা গ্রামে ঢুকে পাখি শিকারসহ বন্যপ্রাণীদের নির্মমভাবে হত্যা করছে। মঙ্গলবার গ্রামের বান্দালির মাঠে মেছো বাঘটি দেখে ফাদ পাতে কিছু যুবক। এ সময় তাদের দেয়া ফাঁদে আটকা পড়লে মেছো বাঘটিকে পিটিয়ে জখম করে তারা। কিছুক্ষণ পরে ওই যুবকেরা তাদের কাছে থাকা তীর ধনুকের তীর দিয়ে নিঃশংসভাবে হত্যা করে মেছো বাঘটিকে। এ বিষয়ে বখতিয়ার হামিদ তার ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন হুবু তুলে ধরা হলো- এই বিরল মেছোবাঘটিকে (ঋরংযরহম ঈধঃ) বিনা কারণে পিটিয়ে মেরেছে খরগোশ শিকারিরা!! চুয়াডাঙ্গার শঙ্কচন্দ্র ইউনিয়নের গাইদঘাট চাঁদপুরমাঠে খরগোশ শিকারের জালে আটকা পড়ে মেছোবাঘটি। আর তখনই পিটিয়ে মারে। খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিলাম সেখানে। এটা মেরেছে চুয়াডাঙ্গার মুক্তিপাড়ার মেথোরপট্টির খরগোশ শিকারি ছোটন, শান্ত, কিশোর, পুষাদ, বিশ্ব ও সুভাষ। এরা প্রায়ই এইসব বিরল প্রাণী হত্যা করে। আমি কয়েকবার ওদের এলাকায় যেয়ে নিষেধ করেও কাজ হয়নি। বরং আমাকেও তীর মারার হুমকি দিয়েছিলো। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কাজ হয় না; কারণ এদের স্পটে পাওয়া যায় না! যদিও এরা আমার এলাকায় ঢোকার সাহস পায় না। এদের বিরুদ্ধে যদি এখনই কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে অচিরেই এসব বিরল প্রাণী হারিয়ে যাবে। এই বিষয়ে মিডিয়া ও প্রাশসনের বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। খরগোশ শিকার করে চুয়াডাঙ্গার মুক্তিপাড়ার মেথোরপট্টির লোকজন। আবার দামুড়হুদার রামনগর ও বুড়োপাড়ার বুনোরা
গ্রামের রাজিব নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, মেছোবাঘ পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জানালেও তাদের কেউ ঘটনাস্থলে যায়নি। পরে কাউকে না পেয়ে সন্ধায় মাঠেই কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে মৃত মেছো বাঘটিকে মাটিচাপা দেয়া হয়। জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি বিকেলে শুনেছেন তিনি। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, এর আগেও মেছোবাঘ আটকা পড়েছিলো ফাঁদে। সে সময় মেছোবাঘটিকে মুক্ত করা হয়েছিলো। এবারের ঘটনাটি দুঃখজনক। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।