পৌরসভায় তালা দিয়ে কর্মচারীদের আন্দোলন
গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার কর্মচারী ও কাউন্সিলরদের মধ্যে টানাপোড়েনের জের পড়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে। গতকাল বুধবার দুপুরে পৌরসভায় তালা ঝুলিয়েছে পৌর কর্মচারীরা। এ ঘটনায় পৌর মেয়রকে দায়ী করেছেন কাউন্সিলরবৃন্দ। আর কাউন্সিলররা দায়ী করছেন পৌর মেয়রকে। এ নিয়ে তাদের মাঝে এখন তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দুপুরে কর আদায় করতে পশ্চিম মালসাদহ গ্রামে যান সহকারী কর আদায়কারী সাহেদুজ্জামান শিলন। পৌরবাসীকে করের বোঝা চাপানো হয়েছে দাবি করে কর আদায় করতে নিষেধ করেন ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল আক্তার। এ নিয়ে বাবুল আক্তার ও কর্মচারীর মধ্যে বাগবিত-া বাধে। এরই মাঝে বাবুল আক্তার তাকে মারধর করে বলে পৌর কর্মচারীদের কাছে অভিযোগ করেন শিলন। এরই জেরে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পৌরসভার তালা মেরে শুরু করে বিক্ষোভ। এ সময় কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিলে কাউন্সিলরদের সাথে বাগবিত-া শুরু হয়। মেয়র আশরাফুল ইসলাম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এতে মেয়র ও কাউন্সিলরদের মাঝে তীব্র বাগবিত-া বাধে। কাউন্সিলররা মেয়রের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মেয়রের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়।
এ বিষয়ে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী ফেডারেশন সভাপতি আজিজুল হক বলেন, শাহেদুজ্জামান শিলনকে লাঞ্ছিত করেছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল আক্তার। এর বিচার দাবি করে আমরা পৌরসভার কাজকর্ম বন্ধ করে আন্দোলন করছি।
পৌর কাউন্সিলর বাবুল আক্তার বলেন, লাঞ্ছিত করার অভিযোগ মিথ্যা। কর আদায় ও বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে কাউন্সিলরদের সাথে মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরোধ চলছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার আমরা পরিষদে আলোচনায় বসি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার আবারও মাসিক সভায় আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। এ আলোচনার দুয়ার বন্ধ করতে মেয়র কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে আমাদের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন।
কর আদায়ের সরকারি কাজে বাধা দেয়া বেআইনি উল্লেখ করে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, কাউন্সিলররা বিভিন্ন কাজের থেকে আমার কাছে অর্থ দাবি করেছেন। অন্যায় দাবি মানতে পারছি না তাই তারা বিরোধ করছে। তবে কর আদায়ে বাধা দেয়ার কোনো এখতিয়ার তাদের নেই।
এদিকে গতকাল দুপুরের উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির পর পৌরসভার ৮জন কাউন্সিলর মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে পৌর পরিষদ পরিচালনার বিষয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে পৌরসভায় তালা দিয়ে মেয়র বাহিনী দিয়ে খারাপ আচরণ এবং লাগামহীন অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছে আন্দোলনকারীরা