স্টাফ রিপোর্টার: আজ বুধবার মাঘ মাসের শুরু। শীত মরসুমের এ সময়ে কুয়াশা ও ঠা-ার তীব্রতা রয়েছে দেশে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আজ বুধবার থেকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। আরও চার-পাঁচ দিন ধরে তা অব্যাহত থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার ৩০ পৌষ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায়, ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনি¤œ ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্র সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। “চলমান শৈত্যপ্রবাহ দুয়েকদিন অব্যাহত থাকবে উত্তরাঞ্চলে। শীতের তীব্রতাও কমে আসবে। শুক্রবার থেকে কুয়াশা ও শীতের দাপট কমার সম্ভাবনা রয়েছে।” জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি ও দীর্ঘসময় ধরে বাতাস থাকায় কয়েক দিন ধরে শীতের দাপট দেখা গেছে রাজধানীসহ সর্বত্র।
ওমর ফারুক বলেন, “তাপমাত্রা কমলে বিকেলেও কুয়াশা দেখা যায় সবখানে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে দাপট থাকে বেশি। তবে বুধবার থেকে তাপমাত্রা বাড়বে। ১৬ জানুয়ারির পর অর্থাৎ শুক্রবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বিভিন্ন স্থানে শৈত্যপ্রবাহও কেটে যাবে আশা করছি।” বাংলাদেশে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীত মৌসুম ধরা হয়। তবে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বাংলা পঞ্জিকার মাঘ মাসের শুরুতে বরাবরই শীতের তীব্রতা বাড়ে।
এবারের শীত মৌসুমে ডিসেম্বরের শেষার্ধে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও ছিলো এক দফা শৈত্যপ্রবাহ। এখন চলছে তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ। এ মাসের শেষ সপ্তাহে আরেকটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
দামুড়হুদা ব্যুরো জানিয়েছে, দামুড়হুদায় প্রাক্তন সেনা বহুমুখি কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে এলাকার অসহায় দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডস্থ মুরাবী পোল্ট্রি ফার্মে সংস্থার বাৎসরিক সভা শেষে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এ উপলক্ষে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। দামুড়হুদা প্রাক্তন সেনা বহুমুখি কল্যাণ সংস্থার নবনির্বাচিত সভাপতি দামুড়হুদার কৃতিসন্তান আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস, ওসি (তদন্ত) কেএম জাহাঙ্গীর কবীর, দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক শরীফুল আলম মিল্টন, প্রাক্তন সেনা বহুমুখি কল্যাণ সংস্থার উপদেষ্টা চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. নুরুল ইসলাম, অ্যাড. আব্দুল খালেক, দামুড়হুদা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি বখতিয়ার হোসেন বকুল, দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড বাজার কমিটির সভাপতি আশরাফুল আলম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সদস্য সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইউসুফ আলী, আব্দুর রকিব, শওকত আলী, শের আলী, ইউসুফ আলী, লাল মিয়া, ফজলুর রহমান, হামিদুল ইসলাম, রইচ উদ্দীনসহ সংস্থার অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। আলোচনা শেষে সংস্থার নবনির্বাচিত সভাপতি দামুড়হুদার কৃতিসন্তান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানকে সংস্থার পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এর আগে সংস্থার সাবেক সভাপতি প্রয়াত সেনা অফিসার আব্দুল হান্নানের রুহের মাগফেরাত ও আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালনসহ দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক শরীফুল আলম মিল্টন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাবেক সেনা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দীন।
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদার বিষ্ণুপুরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উদয়ন সংঘের উদ্যোগে জুড়ানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস প্রাঙ্গণে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউট( বিআইডিএস) এর সাবেক কর্মকর্তা আশাবুল হক। এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুড়ানপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব, সাবেক উপজেলা আ.লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রহমান, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন, হামিদুল হক টুকু, হাসানুজ্জামান, মতিয়ার রহমান মন্টু, গোলাম সরোয়ার নান্নু, যুবলীগ নেতা আহসান কবির, আসলাম উদ্দিন, সংগঠনের সভাপতি কাওসার আলী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা,শারায়েত হোসেন বাবু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন আর্তমানবতার সেবায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, শীতের প্রকোপ এখনো অব্যাহত রয়েছে। সন্ধ্যার পর গা হিম করা শীত বয়ে যাচ্ছে। যার ফলে অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষেরা কষ্টের মধ্যে দিনানিপাত করছে। এ অবসথার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার জীবননগরে শীতার্তদের মাঝে শীত বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল ইসলাম এ শীতবস্ত্র দরিদ্রদের হাতে তুলে দেন। রাতে জীবননগর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্ধু রক্তদান কেন্দ্র উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের রঘুনন্দনপুর গ্রামে অসহায় দরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা করে। কম্বল বিতরণকালে জীবননগর বন্ধু রক্তদান কেন্দ্রের রমজান আলী ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মিঠুন মাহমুদ প্রমুখ।