স্টাফ রিপোর্টার: নতুন বছরের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকের ওপর হামলাসহ নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গতপরশু একাত্তর টিভির খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান রফিক উদ্দীন পান্নুকে লাঞ্ছিত করাসহ তার হাতে পুলিশ পরিয়েছে হাতকড়া। কেনো? তিনি অনিয়মের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে এ পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। সাংবাদিকের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সারাদেশেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। দর্শনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদসভা।
খুলনা ওয়াসার কাজে গাফিলতির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ওয়াসার ঠিকাদার ও পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান রকিব উদ্দিন পান্নু। এসময় হামলাকারীরা টেলিভিশনের ক্যামেরাও ভাঙচুর করে। উল্টো ওই নির্যাতিত সাংবাদিককেই হাতকড়া পরায় পুলিশ। এরপর প্রতিবাদে গতকাল চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মানববন্ধন করে। একাত্তর টিভির চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি এমএ মামুনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রূপ নেয়। এতে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফসহ অনেকে। বক্তারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একজন সাংবাদিককে যখন লাঞ্ছিত হতে হয়, তার হাতে পরানো হয় হাতকড়া তখন বুঝতে বাকি থাকে না, সাংবাদিকরা কোন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সাংবাদিক রফিক উদ্দীন পান্নুর ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। অপরদিকে আমাদের দর্শনা অফিস জানিয়েছে, ৭১ টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান রকিব উদ্দিন পান্নুর ওপর হামলা ও ক্যামারা ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোচ্চার গোটা বিভাগের সাংবাদিকরা। হামলাকারীদের অবিলম্বের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি তুলে দর্শনা প্রেসক্লাবে প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দর্শনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভার সভাপতিত্ব করেন ক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান ধীরু। আলোচনা করেন সাধারণ সম্পাদক আওয়াল হোসেন, সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান যুদ্ধ, যুগ্ম-সম্পাদক মনিরুজ্জামান সুমন, সাবেক সভাপতি হানিফ ম-ল, সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান রনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন রাজু, চঞ্চল মেহমুদ, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত: গত ২ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে দেশের অন্যতম বৃহত জুয়ার আসরের সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করতে গেলে ডিবিসি নিউজের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি সোহেল তালুকদারসহ চার সংবাদকর্মীকে পিটিয়ে জখম করে জুয়াড়িরা। দেয়া হয় হত্যারও হুমকি। সেদিনই মামলা দায়ের করা হলেও গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ধরা ছোঁয়ার বাইরে সেই শক্তিশালী জুয়া চক্রের সদস্যরা। অপরদিকে, গত ৩ জানুয়ারি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চট্টগ্রামের ফয়েস লেকে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার আশহাবুর রহমান শোয়েবের ওপর হামলা চালায় আনসার সদস্যরা। দোষী তিন আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয় সেদিনই। তাদের মধ্যে একজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। খুলনায় সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করাসহ তার হাতে হাতকড়া পরানোর প্রতিবাদে গতকাল চুয়াডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচি একাত্তর টিভি সরাসরি সম্প্রচার করে।