ছাত্রলীগকে নীতি-আদর্শ নিয়ে সংগঠন গড়তে হবে : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: নীতি-আদর্শ ও সততার ভিত্তিতে কার্যক্রম চালিয়ে ছাত্রলীগকে যেন জনগণের আস্থায় আনা যায় সেজন্য সংগঠনটির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, “আদর্শ ছাড়া, নীতি ছাড়া, সততা ছাড়া কখনও কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে না। সেই নেতৃত্ব দেশকে কিছু দিতে পারে না। জাতিকে কিছু দিতে পারে না। মানুষের কল্যাণে কোনো কাজ করতে পারে না। কোন ধরনেরই কোনো সফলতা দেখাতে পারে না। “হ্যাঁ, সাময়িকভাবে অর্থ সম্পদের মালিক হতে পারে, নাম ডাক হতে পারে। কিন্তু সেখানেই বিলীন হয়ে যায়। শুধু দেশের জন্য বা ইতিহাসে কিছু রেখে যাবার মতো কোনো কাজ করতে পারে না।” এই উপলব্ধি থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের আদর্শের রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ছাত্রলীগ সংগঠনকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে একটা নীতি নিয়ে, আদর্শ নিয়ে সংগঠন গড়তে হবে।” নীতি-আদর্শ ও সততার ভিত্তিতে কার্যক্রম চালিয়ে ছাত্রলীগকে যেন জনগণের আস্থায় আনা যায় সেজন্য সংগঠনটির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।
ষাটের দশকে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের উত্তাল সময়ে ছাত্রলীগের ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “জাতির যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে ছাত্রলীগ সব সময় বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। যখন আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) জেলে থাকতেন তখন ছাত্রলীগ সব সময় যোগাযোগ রাখত আমার মায়ের সাথে এবং তিনি নির্দেশনা দিতেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেকই কিন্তু ছাত্রলীগ কাজ করতো।” পঁচাত্তরে বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করার পর এই ছাত্রলীগের ‘কিছু ছেলে’ এবং সেই সাথে ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য সংগঠন মিলে প্রথম প্রতিবাদ করেছিলো বলেও স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর ছয় বছর নির্বাসনে থাকা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিও ছাত্রলীগই প্রথম করেছিলো বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদানের কথা স্মরণ করে সংগঠনটির সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। ছাত্রদের হাতে ‘অস্ত্র ধরিয়ে দেয়ার জন্য’ সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও এইচএম এরশাদকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আইয়ুব খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জিয়াউর রহমান মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র, তাদের হাতে অর্থ তুলে দিয়ে তাদেরকে ব্যবহার করত একটা লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে। তাদেরকে ব্যবহার করত অবৈধভাবে দখলকৃত ক্ষমতাকে বৈধ করার একটা হাতিয়ার হিসেবে। এইভাবে বহু মেধাবী ছাত্রের জীবন তারা নষ্ট করেছে। “যারাই অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে…আমরা জিয়াউর রহমান বলি, এরশাদ বলি এমনকি খালেদা জিয়ার আমলে মেধাবী ছাত্রদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।”
বর্তমানের ছাত্রদের মধ্য থেকেই আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বেরিয়ে আসবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা আগামী দিনে এই দেশকে পরিচালনা করবে, তাদের যদি বিপথে পরিচালনা করা হয়, তাদের যদি রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাহলে তারা কখনোই সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারে না, পারবে না।” শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতার সংগ্রামের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।