স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে গেল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুমনা পারভীনের। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামে গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়। বাল্যবিয়ের শিকার সুমনা পারভীন গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মুদিব্যবসায়ী শামুসল ইসলামের মেয়ে এবং পার্শ্ববর্তী সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
গ্রামের কয়েকজন নামপ্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে জানান, ‘সুমনা পারভীনের বয়স মাত্র ১২ বছর। শুক্রবার বাড়ির সামনে বিরাট গেট সাজানো হয়। পার্শ্ববর্তী নূরনগর গ্রামে থেকে দুটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকার যোগে আসেন বর ও বরযাত্রীরা। বাল্যবিয়ের বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানায়; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আর এ কাজে গ্রামেরই মেম্বার খলিলুর রহমান এ বাল্যবিয়ে দেয়ার সহযোগিতা করেছেন।’ মেম্বার খলিলুর রহমান অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, ‘বাল্যবিয়ের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি বিকেলে যাওয়ার আগেই বিয়ের লোকজন বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ফেলেছে। তখন আমার আর কিছুই করার ছিলো না।’ চুয়াডাঙ্গা জজকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কমপক্ষে চারবার চুয়াডাঙ্গা সদর ইউএনওকে বাল্যবিয়ের বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি ব্যবস্থা নেননি। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে হয়তো ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হতো না।’
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাদিকুর রহমান মাথাভাঙ্গাকে বলেন, ‘আমি অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লোক পাঠিয়েছি। তবে শুনেছি ছয়মাস আগেই নাকি সুমনার বিয়ে হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার শুধু আনুষ্ঠানিকতা করছে। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি যারাই বাল্যবিয়ের সঙ্গে জড়িত থাকবে; তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’