আলমডাঙ্গার হাউসপুরের ওয়াবদাহ’র জমি দখলেরে অভিযোগ

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ওয়াবদাহ’র জমি দখল করে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে হাতবদলের ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে আলমডাঙ্গার হাউসপুরের হাফিজুলসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার কুমার নদ অর্থাৎ গঙ্গা সেচ প্রকল্পের মেইন ক্যানেলের ওয়াবদাহ’র জমি অবৈধভাবে দখল করে ঘরবাড়ি থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। আলমডাঙ্গার লালব্রিজ থেকে আনন্দধাম-হাউসপুর অবধি এ মারাত্মক দখল পুরো নদকে গ্রাস করে ফেলেছে। পূর্বে এ নদ বা ক্যানেলের আউট সাইড দখল করা হলেও কয়েক বছর আগে থেকে ইনসাইড দখল করে ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ শুরু করা হয়। এখন লালব্রিজ থেকে আনন্দধাম অবধি ইনসাইড এমনভাবে দখল করা হয়েছে যে, নদপাড় দিয়ে হাঁটতে গেলে নদের সৌন্দর্য্য দেখার সৌভাগ্য হয় না। অবৈধ দখলদারদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাধের এ নদটিকে লোকচক্ষুর আড়াল করেছে। শুধু কুমার নদ বা মেইন ক্যানেল না, বকশিপুর অভিমুখে গতিশীল টার্সিয়ারি সেচ প্রকল্পের খালের পাড়ও দখল হয়ে গেছে।
নতুন করে আলমডাঙ্গার হাউসপুর গ্রামের মুক্তার আলীর ছেলে হাফিজুল, শুকুর আলীর ছেলে ফিরোজ ও নিজাম আলীর ছেলে মোমিন ওয়াবদার জমি দখল করে হাত বদলের ব্যবসায় বেশ আলোচিত। বর্তমানে তাদের বিরুদ্ধে ওয়াবদার জমি দখল করে হাত বদলের ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে। তারা ওয়াপদার গঙ্গা সেচ প্রকল্পের জমি অবৈধভাবে দখল করে পরে মোটা অংকের টাকায় তা হাত বদল করে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, আনন্দধাম ব্রিজ থেকে বকশিপুর রোডের দিকে কিছুদূর গিয়ে মেইন ক্যানেলের ইনসাইড দখল করে বকশিপুর গ্রামের মৃত রব্বানী ম-লের ছেলে আব্দুর রহিম ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন। তিনি জানান, প্রায় ২ বছর পূর্বে তিনি একটি টিনসেডসহ ওই স্থানের দখল কিনেছেন হাউসপুরের হাফিজুলের নিকট থেকে। ঘরের জন্য ৫০ হাজার ও জমির জন্য ৫০ হাজার টাকা নিয়ে হাফিজুল তার দখলদারিত্ব হস্তান্তর করেছে। আরও অভিযোগ উঠেছে যে, হাফিজুল একই স্থানের মেইন সেচপ্রকল্পের ক্যানেলের ইনসাইডের জমি দখল করে আরেকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। সেটির দেখভাল করছেন হাউসপুর গ্রামের নিজাম উদ্দীনের ছেলে মোমিন। মোমিন এখন ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সেলুনের ব্যবসা করছেন। ভালো ক্রেতা পেলে সেটি হস্তান্তর করা হবে বলে এলাকার অনেকে জানান।
এলাকাবাসী জানান, ওই স্থানের আরও একটি জায়গার ওপর নজর পড়েছে একটি চক্রের। একটি বটগাছের নীচে চারকোনায় খুঁটি গেড়ে উপরে টিন দিয়ে তার নীচে গরু বেঁধে রাখতো জাহান আলীর পরিবারের লোকজন। গত পরশুদিন গিয়ে ওই গরুরঘর ভেঙে দিয়েছেন হাফিজুল, ফিরোজ ও মোমিন। এ নিয়ে ওই রাতে সালিস বৈঠকও বসে। এ ঘটনা স্বীকার করেছেন জাহান আলীর পরিবারের লোকজন। তবে তিনি ওই চক্রের বিরুদ্ধে বেশিকিছু অভিযোগ করতে সাহস পাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকেই ওই চক্রের দৌরাত্ম দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন।
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে অভিযুক্ত হাফিজুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আব্দুর রহিমের নিকট তিনি শুধু ঘর বিক্রির টাকা নিয়েছেন। জমি বাবদ কিছু নেননি। মোমিনের দখলে থাকা ঘর সম্পর্কে বলেন, তিনি নাকি অনেক লসে আছেন। সেখানে অবস্থিত বেশ কয়েকটি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ তোলেন অন্যের বিরুদ্ধে। এছাড়া জাহান আলীর গরু রাখার ঘর ভেঙে দেয়ার ঘটনাকে ভুল বোঝাবুঝি বলে মন্তব্য করেন।