গাংনীর সেই সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা : জরিমানা আদায়

গাংনী প্রতিনিধি: স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো মেহেরপুর গাংনীর সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এবার উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা ও জরিমানা আদায় করেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার এ অভিযান পরিচালনা করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ অঞ্চলের শীর্ষ জনপ্রিয় দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় ‘স্বাস্থ্য বিভাগকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গাংনীর সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু : প্রশাসন নিরব।’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে সহাকারী কমিশনার (ভূমি) সুখময় সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভেতরে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করেন। এ সময় কর্তৃপক্ষ অনুমোদনের কোনো কাগজপত্র নেই বলে জানান। গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মনিরুজ্জামান বিজয় ও হাফিজুর রহমান অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিসিয়ান নেই। তাছাড়া রোগীদের কাছ থেকে নেয়া রক্ত ও কফ’র নমুনা ফ্রিজে সংরক্ষণ করে। যা বাংলাদেশ মেডিক্যাল প্র্যাকটিস এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরিজ অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ৮ ও ৯ ধারার পরিপন্থি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদ্বয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার বলেন, আইন অনুযায়ী ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছ। ভ্রাম্যমাণ আদালত ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের পৃথক তালাবদ্ধ করা হয়েছে। যাতে কেউ তালা খুলে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে না পারে। যথাযথ কাগজপত্র হাতে পেলেই তালা খুলে দেয়া হবে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার। ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রসিকিউটর ছিলেন গাংনী উপজলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বিডি দাস।
প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালানোয় গত ২৩ জুলাই মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনলাইনে আবেদন করেছিলো। আবেদনটি অসম্পূর্ণ হওয়ায় পেন্ডিং রয়েছে। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্পূর্ণ অবৈধ। ‘দি মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রতিষ্ঠানটি বিধি বহির্ভূতভাবে পরিচালিত হওয়ায় জনস্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশ অমান্য করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই নির্দেশনাপত্র প্রাপ্তির পর ২৩ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। তবে কয়েকদিন প্রতিষ্ঠানটি তালাবদ্ধভাবে থাকলেও আবার তা চালু করে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়।
এর আগে পরীক্ষার ভুল রিপোর্টের প্রতিবাদ করায় গাংনী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এমকে রেজার ওপর হামলা করে ডায়াগনস্টিক মালিক বিজয় ও তার লোকজন। আন্দোলনের মুখে বিজয় গ্রেফতার হলেও জামিনে মুক্তি পায়। তখন আবারও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করলেও নানা অভিযোগ ছিলো।