চুয়াডাঙ্গাসহ ৬ জেলায় আগাম চাষের পেঁয়াজ রসুনের বাম্পার ফলন : দরপতনে দুশ্চিন্তায় চাষি

স্টাফ রিপোর্টার: পশ্চিমের জেলাগুলোতে চলতি মরসুমে আগাম চাষ করা পেঁয়াজ ও রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। পেঁয়াজের পাইকারি হাটগুলোতে প্রচুর পেঁয়াজ-রসুন উঠতে শুরু করলেও দরপতনের কারণে চাষিরা দুশ্চিন্তায় আছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের যশোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা যায়, যশোর জেলায় এক হাজার ৪৫ হেক্টরে, ঝিনাইদহে ৭ হাজার ৬১৫, মাগুরায় ৬ হাজার ৬৩৫, মেহেরপুরে ১৬শ’ ২৫, চুয়াডাঙ্গায় ৭শ’ ৩০ ও কুষ্টিয়ায় ১১ হাজার ১২০ হেক্টরে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। শুরুতে আবহাওয়া পিঁয়াজ চাষের প্রতিকূলে ছিলো। বৃষ্টির কারণে অনেক বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। পরে বীজতলা তৈরি করে পিঁয়াজ চাষ করতে হয়েছে। এতে অনেক চাষির চাষ নাবি হয়েছে। পিঁয়াজের এখন ভরা মরসুম চলছে। চাষিরা জানায়, আগাম চাষ করা জমিতে বিঘা প্রতি ফলন ৮০ মণ থেকে একশ’ মণ পর্যন্ত হচ্ছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের পিঁয়াজ চাষি মো. নূরুজ্জামান জানান, এবার ৩ বিঘা জমিতে পিঁয়াজ চাষ করেছেন। গড়ে বিঘা প্রতি একশ’ মণ ফলন পেয়েছেন। একই উপজেলার ব্রহ্মপুর চাষিরা জানান, তাদের গ্রামে এবার নাবিতে পিঁয়াজ চাষ হয়েছে। বিঘা প্রতি ৫০-৬০ মণ ফলন হচ্ছে।

মেহেরপুর সদর উপজেলার শুভরাজপুর গ্রামের চাষি জিয়াউর রহমান জানান, এবার ৩ বিঘা জমিতে পিঁয়াজ চাষ করেছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে। তাদের এলাকায় সুখসাগর জাতের পিঁয়াজ চাষ হয়। বিঘা প্রতি ১২০ থেকে ১৪০ মণ ফলন হয়েছে। এ জাতের ১০-১২ টা পিঁয়াজে এক কেজি ওজন হয়। বর্তমানে মেহেরপুর এলাকায় সুখসাগর জাতের পিঁয়াজ ৪২০ টাকা থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।

পশ্চিমের ছয় জেলায় ছয় হাজার ৫৪৫ হেক্টরে রসুন চাষ হয়েছে। রসুনেরও ভালো ফলন হয়েছে। পিঁয়াজের পাইকারি হাটগুলোতে প্রচুর পিঁয়াজ রসুন উঠছে। শনিবার দেশের অন্যতম প্রধান পিঁয়াজ হাট ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দেশি তাহেরপুরি ও ফরিদপুরি জাতের পিঁয়াজ প্রতিমণ ৭শ’ টাকা থেকে ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়। পাইকাররা এ পিঁয়াজ কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও বরিশালে চালান নিয়ে যায়। শনি ও মঙ্গলবার শৈলকুপা থেকে ৩০-৪০ ট্রাক পিঁয়াজ চালান যায়। মাগুরার লাঙ্গলবাঁধ হাট থেকে বিপুল পরিমাণ পিঁয়াজ চালান যায়। পিঁয়াজের পাশাপশি রসুনের দামও কমে গেছে। প্রতি মণ এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত বছর চাষির পিঁয়াজ বিক্রি শেষ হয়ে গেলে বাজার ব্যাপক চড়ে গিয়েছিলো। পাইকারি প্রতিমণ সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত চড়েছিলো। আর খুচরা একশ’ টাকা কেজি দর উঠেছিলো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের যশোর আঞ্চলিক অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক চণ্ডি দাস কুণ্ডু জানান, এবার পিঁয়াজ রসুনের ব্যাপক ফলন হয়েছে। তবে দরপতনে চাষিরা খুশি নয়।