মাদকব্যবসায়ী পলাশসহ গ্রামবাসীর সাক্ষ্যগ্রহণ

?

জীবননগরের সিংনগর গ্রামে তদন্ত কমিটির ঘটনাস্থল পরিদর্শন

জীবননগর ব্যুরো: ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানিয়ে শাদা পোশাকে অন্য থানা এলাকায় অভিযান চালানোর কারণে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পাঁচ এএসআইসহ ৬ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করার ঘটনায় তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলামসহ তদন্ত দলের অন্য সদস্য সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবিব গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ, জীবননগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদ রহমান, উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন প্রমুখ। এসময় তদন্ত দলের সদস্যরা চি‎িহ্নত মাদক ব্যবসায়ী পলাশ, তার ভাই তোতা ও তোতার স্ত্রী বিউটি খাতুন এবং একাধিক প্রতিবেশীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
তদন্তকালে মাদক ব্যবসায়ীর পলাশ, তার ভাই তোতা এবং তোতার স্ত্রী বিউটি খাতুন তদন্ত দলের কাছে তিনজন তিন রকম বক্তব্য দিয়েছেন। এসময় ওই গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বলেন, মেহের আলীর ছেলে তোতা এবং তার ছোট ভাই পলাশ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তারা দির্ঘদিন থেকে ফেনসিডিল, মদ ও ইয়াবা পায়কারি এবং খুচরা বিক্রি করে আসছে।
গ্রামবাসী আরও জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩ বোতল ফেনসিডিলসহ পলাশকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এসময় পলাশের সহযোগী নারীরা পুলিশের ওপর হামলা করে মাদক ব্যবসায়ী পলাশকে ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে পলাশ ও তার ভাই তোতা পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য নিজেরা নিজেদের ঘরবাড়ি এবং আসবাবপত্র ভাঙচুর করে পুলিশের ওপর মিথ্যা দোষ চাপিয়ে নাটক সাজিয়েছে।
তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং কয়েকজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরো সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। তারপর তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেয়া হবে। তদন্তে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পাঁচ সহকারী উপ-পরিদর্শক এবং একজন কনস্টেবল বৃহস্পতিবার বিকেলে শাদা পোশাকে জীবননগর উপজেলার সিংনগর গ্রামে অভিযান চালান এবং তিন বোতল ফেনসিডিলসহ চি‎িহ্নত মাদক ব্যবসায়ী ওই গ্রামের পলাশকে গ্রেফতার করে। ওই সময় মাদক ব্যবসায়ী পলাশের সহযোগী নারীরা পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে পলাশকে ছাড়িয়ে নেন। পরে তারা পুলিশের ওপর হামলা করেন এবং পুলিশ সদস্যদেরকে এক প্রকার বন্দি করে রাখেন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ এবং জীবননগর থানা থেকে পুলিশ এসে ওই ৬ পুলিশকে উদ্ধার করে।
এসময় মাদক ব্যবসায়ী পলাশের পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয় যে, পুলিশ সদস্যরা তাদেরকে মারপিট করেছে এবং তাদের ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করেছে।
বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবহিত হলে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত ৬ পুলিশকে সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নেয়া হয় এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলামকে প্রধান করে দু’সদস্যের তদন্ত দল গঠন করা হয়।