কামড়ে ধরা পথচারীর পা ছাড়ার পর দেখা গেল গলাটিপে ধরা কুকুরটি মারা গেছে

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে কুকুরের উৎপাত : রাতে অধিকাংশ সড়কেই দেখা যায় ওদের সমাবেশ

আহসান আলম: খ্যাপা কুকুর কামড়ে ধরেছে পা, আর জহুরুল ইসলাম ধরেছে কুকুরের গলা। খ্যাপা কুকুর যখন জহুরুলের পা ছেড়েছে, তখন দেখা গেল কুকুরটি আর বেঁচে নেই। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল পাড়ার ‘ট’ বাজারের নিকট। এছাড়াও গতকাল পৃথক খ্যাপা কুকুর শান্তিপাড়া ও বেলগাছি মুসলিমপাড়া এলাকায় ৩ নারীসহ ৪জনকে কামড়ে পালিয়েছে। একের পর এক খ্যাপা কুকুরে পথচারীদের কামড়ে আহত করার ঘটনা জানাজানি হলে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে পৌর কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, দীর্ঘদিন কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় চুয়াডাঙ্গা যেন কুকুরের শহরে রূপান্তর হওয়ার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বড়বাজার, নিচের বাজার বাজার, কেদারগঞ্জ ও রেলবাজারেই শুধু বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত অসহনীয় হয়নি, অলিগলির পাশাপাশি প্রধান প্রধান সড়কেও রয়েছে কুকুরের উৎপাত। বিশেষ করে রাতের গভীরতা বাড়তেই সড়কের ওপর কুকুরের একাধিক সমাবেশ শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু কুকুর রয়েছে, ওরা মোটরসাইকেল দেখলেই পিছু ধাওয়া করে। এতে দুর্ঘটনায় অনেকের জীবনে নেমে এসেছে পঙ্গুত্বের অভিশাপ। আর বছরান্তে কতো কুকুর যে কতোজনকে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। এরই মাঝে গতকাল রোববার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা শান্তিপাড়ায় নিজেদের বাড়ির সামনেই খ্যাপা কুকুরের কামড়ের শিকার হন শাহিন আলীর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৫২) ও মৃত আমজাদ হোসেনের স্ত্রী তিমুরা খাতুন (৫০)। এছাড়াও একইপাড়ার আখতারুজ্জামানের স্ত্রী মর্জিনা বেগমকেও কুকুরে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে। বেলগাছি রেলগেটের নিকট পাগলা কুকুরে কামড়ে আহত করেছে মুসলিমপাড়ার আতিয়ার রহমানের ছেলে রাজিবুল ইসলামকে (২১)। তিনি মোটরসাইকেল মিস্ত্রি। এদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা আরামপাড়ার মৃত আজিবার হোসেনের চেলে জহুরুল ইসলাম, গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতালপাড়ার ‘ট’ বাজারের দিকে যাওয়ার সময় একটি খ্যাপা কুকুর পায়ে কামড়ে ধরে। জহুরুল ইসলামও নাছড় বান্দা। তিনিও কুকুরের গলা টিপে ধরেন। এমনভাবে গলাটিপে ধরেন যে কিছুক্ষণের মধ্যেই কুকুর তার পা ছাড়তে বাধ্য হয়। পা ছেড়ে দেয়ার পর যখন গলা ছাড়েন জহুরুল, তখন দেখা যায় কুকুরটি মারা গেছে। দৃশ্য দেখে অনেকেই জহুরুল ইসলামের ঘাড়ে থাবা দিয়ে বলেন, সাবাস! কুকুরটি না মারলে কতোজনকেই না কামড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলতো।