মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন মাঠের মসুরক্ষেতে রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। মসুর গাছ হলুদ হয়ে মারা যাচ্ছে। অপরদিকে জাব পোকার আক্রমণও দেখা যাচ্ছে। তবে প্রতিষেধক প্রয়োগ করলে রোগ-বালাই মুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মরসুমে জেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে মসুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় জাত ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল বারি মসুর-৩, বারি মসুর-৬, বারি মসুর-৭ ও বারি মসুর-৮ রয়েছে।
মসুরচাষি সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে বৃষ্টিপাতের কারণে এবার রবি মরসুম পিছিয়ে গেছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মসুর বীজ বুনতে পারেননি কৃষকরা। এখন মসুর গাছে ফুল এসেছে। স্বল্প পরিমাণে ফল দেখা যাচ্ছে। এরই মাঝে ক্ষেতের কিছু কিছু জায়গায় মসুর গাছ হলদে রঙ ধারণ করছে। হলদে থেকে এক পর্যায়ে শুকিয়ে মারা যাচ্ছে মসুর গাছ। আবার কোনো কোনো ক্ষেতে ফুল আসা গাছ শুকিয়ে বাদামি রঙ ধারণ করে মারা যাচ্ছে।
সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের চাষি মাহাতাব আলী জানান, এই সময়ে মসুরে পুরোপুরি ফল আসার কথা। কিন্তু নাবলা আবাদ তাই ফল আসতে দেরি হচ্ছে। কিন্তু ফুল অবস্থায় আমার ক্ষেতের বেশকিছু জায়গায় মসুর মারা যাচ্ছে। দুইদিন আগে প্রতিষেধক স্প্রে করেছি।
ভোমরদহ ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ বলেন, আক্রান্ত ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। কা-ে এনথ্রাক্সনোজ রোজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিষেধক হিসেবে আক্রান্ত গাছ তুলে নষ্ট করতে হবে এবং ক্ষেতে কপার অক্সাক্লোরাইড প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এদিকে মাষের শেষ সপ্তাহ থেকে তাপমাত্রার পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। রাত ও দিনের তাপমাত্রার বড় পার্থক্য দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে মসুর ক্ষেতে জাব পোকার তীব্র আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাব পোকাষ স্বল্প সময়ের জন্য অতিমাত্রায় একটি শোষক পোকা। এটি গাছের কা- ও পাতা রস খায়। স্বল্প সময়ের মধ্যে আক্রমণ করে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে চলে যায়। তবে সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে ফলন বিপর্যয় দেখা যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, মসুর ক্ষেতে যে রোগ দেখা দিয়েছে তা বড় ধরনের কিছু নয়। স্বাভাবিকভাবে প্রয়োজনীয় বালাইনাশক স্প্রে করলেই ভালো হয়ে যাবে। এ বিষয়ে ব্লকে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।