সিজারের পরামর্শ পাওয়া প্রসূতির অ্যাম্বুলেন্সে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব

ভাগ্যিস চুয়াডাঙ্গার ক্লিনিকে না নিয়ে নেয়া হচ্ছিলো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

স্টাফ রিপোর্টার: চিকিৎসক প্রসূতিকে দেখে বললেন, দ্রুত ভিত্তিতে সিজার করতে হবে। তাও আবার যেখানে সেখানে নয়, নিতে হবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকের পরামর্শে তড়িঘড়ি করে গতরাত ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে প্রসূতিকে নেয়া হয় রাজশাহীর উদ্দেশে। না, রাজশাহী পর্যন্ত পৌঁছুতে হয়নি, করতেও হয়নি সিজার। নাটোর পর্যন্ত পৌঁছুনোর আগেই অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই গতরাত ১১টার দিকে ঈশ্বরদীতে প্রসূতি স্বাভাবিকভাবেই প্রসব করেন সন্তান। এরপর ওঠে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রশ্ন।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দলকা লক্ষ্মীপুরের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী রোজিনা খাতুন (৩০) ১০ বছর আগে স্বাভাবিকভাবে কন্যাসন্তান প্রসব করেন। প্রথম সন্তানের বয়স এখন ১০ বছর। এর মাঝে রোজিনা খাতুন অন্তঃসত্ত্বা হন। চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল রোডের ডা. সোনিয়া খাতুনের পরামর্শেই তিনি চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন। প্রসব বেদনা দেখা দিলে গতকাল বিকেলে তাকে ডা. সোনিয়ার চেম্বারে নেয়া হয়। তিনি রোগী দেখে দ্রুত সিজার করতে হবে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেলে নেয়াই ভালো বলে জানান তিনি। সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রসূতির সাথে থাকা নিকটজনেরা এসব তথ্য দিয়ে বলেছেন, রাত ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রোগী নেয়া হয় রাজশাহীর উদ্দেশে। ঈশ্বরদীতে প্রসূতি স্বাভাবিকভাবেই সন্তান প্রসব করেন। অ্যাম্বুলেন্সেই নবজাতক কেঁদে ওঠে। এতে স্বস্তি ফেরে সকলের। অ্যাম্বুলেন্স ঘুরিয়ে নেয়া হয় ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে। সেখানে চিকিৎসক দেখে মা ও নবজাতক ভালো আছে বলে জানান। পরে তারা ধরেন ফিরতি পথ। তবে গতরাতে কুষ্টিয়ার এক আত্মীয় বাড়ি থাকার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে প্রসূতির স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হওয়ার পর তার সাথে থাকা লোকজন প্রশ্ন তুলে বলেন, তা হলে চিকিৎসক কী দেখে বুঝলেন যে সিজার করতে হবে?
অনেকেই বলেছেন, ক্লিনিকে নিয়ে প্রসূতির সিজার করানোর মধ্যদিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রবণতা গড়ে উঠেছে। এমনিভাবে রোগী ও রোগীর লোকজনকে ভীতু করে তোলা হয় যাতে তড়িঘড়ি করে ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করিয়ে ওই সিরাজ করানো হয়। যেহেতু চিকিৎসক পরামর্শ দেন সেহেতু বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করার সুযোগও কম। স্বাস্থ্য সমস্যার বিষয়টি চিকিৎসকেরই বোঝার কথা। এর আগে অর্থবাণিজ্যের কটুকৌশল থাকলেও ধরবেন কীভাবে? ফলে প্রতিবাদ করারও জো নেই। এ কারণে প্রসূতির সিজার করার সংখ্যা দিনদিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।