মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরে বেকার লোকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মসংস্থানের অভাব ও চাকরি না পাওয়ায় মানুষ বেকার হয়ে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। বিশেষ করে যুবসমাজ মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। মেহেরপুরে বর্তমানে ১৮ থেকে ৩২ বছর বয়সের উচ্চ ও স্বল্পশিক্ষিত কর্মক্ষম অসংখ্য বেকার রয়েছে। এদের বেশির ভাগই সরকারি চাকরি লাভের আশায় দিন কাটাচ্ছে। কেউ কেউ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করলেও তাতে সফল হয়ে ওঠেনি। ফলে তাদেরকে ঋণের বোঝা নিয়ে হয়রানি হতে হচ্ছে।
জেলায় নতুন করে কোনো শিল্প-কারখানা আজ পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। সদরে কোনোরকম ভারি শিল্প-কারখানা গড়ে না ওঠায় বেকারের এ সঙ্কট মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার মতো অনেক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কোনো উদ্যোগ নেই। কাঁচামাল হিসেবে কৃষিজ পণ্য ব্যবহৃত হয় এমন শিল্পের সম্ভাবনা প্রচুর । ঋতু ভেদে মেহেরপুর অঞ্চলের লাখ লাখ টন কাঁঠাল, আম, পেয়ারা, আনারস, লিচু, জলপাই, বড়ইসহ অনেক ফল স্থলপথের যোগাযোগের ব্যবস্থা ও সংরক্ষণের অভাবে বাগানে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানে হিমাগার প্রতিষ্ঠা করে এগুলো সংরক্ষণ করা গেলে ফল প্রক্রিয়াজাত কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হতো। এছাড়া রাইস মিল, চিনি মিল, টেক্সটাইল মিল, যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা, জুতা, ম্যাচ, সাবান, রুটি ও বিস্কুট কারখানা খাতে রয়েছে সাফল্যের প্রচুর সম্ভাবনা।
শুধু উদ্যোক্তা সৃষ্টি না হওয়ার কারণে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এ অঞ্চলের মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাঁঠ, বাঁশ বিক্রি ও ব্যবহারের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। মাঝে মধ্যে সৃষ্ট অচলাবস্থা এখানকার মানুষের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিকল্প উপার্জনক্ষেত্র সৃষ্টি না হওয়ায় জনজীবনে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যাংক ঋণ সুবিধা নিয়ে এ জেলায় শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে এ অঞ্চলের অসংখ্য কর্মহীন ও বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে।