বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব আজ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আজ শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দফা। তাবলিগ জামাতের তিন দিনব্যাপী এ বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে ইতোমধ্যে মুসলিস্নরা ইজতেমা মাঠে আসতে শুরু করেছেন। তবে এ দফায়ও আগের মতো প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন। বিশ্ব ইজতেমার মুরব্বি মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, এ দফায় ঢাকাসহ ১৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। এ জন্য ইজতেমা ময়দানকে ২৮টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ব ইজতেমার এ পর্বেও বিদেশি মুসল্লিরা অংশ নেবেন। ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম হকোণায় বিদেশি মুসল্লিদের জন্য নিবাস স্থাপন করা হয়েছে।

দ্বিতীয় দফায় দেশের ১৪ জেলার মুসল্লিরা ২৮টি খিত্তায় যেভাবে অবস্থান নেবেন, তা হলো- ১ নং থেকে ১০ নং, ১৮ নং ও ১৯ নং খিত্তায় ঢাকা জেলা, ১১ নং ও ১২ নং খিত্তায় জামালপুর, ১৩ নং খিত্তায় ফরিদপুর, ১৪ নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ১৫ নং খিত্তায় ঝিনাইদহ, ১৬ নং খিত্তায় ফেনী, ১৭ নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ২০ নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ২১ ও ২২ নং খিত্তায় কুমিল্লা, ২৩ ও ২৪ নং খিত্তায় রাজশাহী, ২৫ ও ২৭ নং খিত্তায় খুলনা, ২৬ নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও এবং ২৮ নং খিত্তায় পিরোজপুর জেলা। গতকাল বৃহস্পতিবার ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, বিকেল নাগাদ হাজার হাজার মুসল্লি ময়দানে সমবেত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা দূর-দূরাত্ম থেকে ট্রেনে ও বাস-ট্রাক, নৌযানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে টঙ্গী ও ময়দানে আসছেন। এরপর নিজেদের ব্যাগসহ মালপত্র ও লাকড়ি কাঁধে নিয়ে নিজ নিজ খিত্তায় অবস্থান করছেন।

গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, বর্তমান সরকারের নির্দেশে প্রতিবারের ন্যায় ইজতেমা ময়দানের ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে এ বছরও গোসলখানা, ওজুখানাসহ উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রথম দফার ইজতেমার মতো দ্বিতীয় দফায়ও ইজতেমা ময়দান ও আগত মুসল্লিদের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখব ইনশাল্লাহ।

গাজীপুরে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, দ্বিতীয় দফার জন্যও তাদের আগের দফার মতো ব্যাপক ও সর্বাঙ্গীণ প্রস্তুতি রয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মুসল্লিরা ভালোমতো ইজতেমা সেরে ফিরে যেতে পারে তার জন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় গাজীপুর পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশীদ জানান, বিশ্ব ইজতেমায় দায়িত্ব পালনের জন্য ৭ হাজার পুলিশ সদস্য প্রস্তুত রয়েছে, নেয়া হয়েছে ৭ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাবলিগ জামাতের দ্বন্দ্বের কোনো প্রভাব ইজতেমায় পড়বে না জানিয়ে তিনি বলেন, অর্ধশতাধিক অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ইজতেমা ময়দান ও এর আশপাশের এলাকা মনিটরিং করা হচ্ছে। ইজতেমা ময়দানে যাতে মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে আসতে পারেন সে জন্য যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এর পাশাপাশি তুরাগ নদে নৌপুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। ইজতেমা ময়দানের প্রতিটি খিত্তা ও ময়দানের আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক শাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। ময়দানের আশপাশের এলাকা হকার ও ভিক্ষুকমুক্ত করা হয়েছে। ইজতেমায় আগত বিদেশি মেহমানদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে একই ময়দানে গত ১২ জানুয়ারি শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফা। প্রথম দফায় ঢাকার একাংশসহ ১৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেন। ১৪ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছিলো প্রথম দফা। দ্বিতীয় পর্বে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে ২১ জানুয়ারি রোববার। এ আখেরি মোনাজাতের মধ্য শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।