আলমডাঙ্গার মাদকসম্রাজ্ঞী মিনির জামিনে এলাকাবাসী শঙ্কায়

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় ‘মিনি’ নামটি যেন মাদকেরই আরেক নাম। মিনির চার মেয়ে ও তাদের স্বামীসহ পুরো পরিবার মাদকব্যবসায় জড়িত। এরা আলমডাঙ্গার মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করে। মাদক সম্রাজ্ঞী মিনিকে ক’দিন আগে গ্রেফতার করেছিলো আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। মাদক মামলায় হাজতে পাঠানো হয়েছিলো তাকে। এ ঘটনায় আলমডাঙ্গাবাসী সন্তুষ্ট হয়েছিলো। কিন্তু মিনি সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসেছে। মিনি জামিনে বেরিয়ে আসার ঘটনায় চাঙ্গা হতে উঠতে দেখা গেছে মাদকসেবীদের। এখন প্রায় প্রতিদিন ইয়াবার চালানও ধরা পড়ছে। সবার ধারণা প্রতিটি চালানের সাথে কোনো না কোনোভাবে মিনি হাত রয়েছে। অন্যদিকে আলমডাঙ্গাবাসী শঙ্কিত, আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পুনরায়! এতে পুলিশের মাদক বন্ধে অতিরিক্ত আইজি মীর শহিদুল ইসলামের নির্দেশনা হুমকির মধ্যে পড়বে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। তারা বলছেন, মাদক সম্রাজ্ঞী মিনির মাদকের নেটওয়ার্ক বহুদূর বিস্তৃত। সীমান্ত থেকে আলমডাঙ্গার পথে পথে রয়েছে তার ভাড়াটে লোক। এই বিস্তৃত নেটওয়ার্ক আলমডাঙ্গার মাদক সাম্রাজ্যে প্রভাব ফেলতে বাধ্য বলে মনে করছে সবাই।
মাদক সম্রাজ্ঞী খ্যাত মিনি জামিনে বাইরে বেরিয়ে আসার খবরে গত সোমবার আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ মিনির মাদক পল্লীতে আবারও হানা দেয়। মিনি এ সময় বাড়ির বাইরে ছিলো। তাকে পাওয়া যায়নি। মিনি ও তার স্বামী আলাউদ্দিনসহ মাদক ব্যবসায়ী চার মেয়ে ও তাদের স্বামী এলাকায় থাকলে মাদক বন্ধ করা কঠিন হবে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। তারা বলেন, মাদক বন্ধে পুলিশের অভিযান চলা পর্যন্ত এই মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছে না ভাব নিয়ে চলবে। কিন্ত এরা বসে থাকার মানুষ না। সম্পূর্ণ অপরিচিত তৃতীয় ও চতুর্থ হাত দিয়ে ঠিকই চতুরতার সাথে ব্যবসা চালিয়ে নেবে।
মিনি জামিনে বেরিয়ে আসার পর এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫শ পিস ইয়াবা আটক করেছে পুলিশ। এইসব ইয়াবার সাথে মিনির হাত থাকতে পারে বলে মনে করছে সবাই। মিনির একই পরিবারের মোট ১২ জন মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবির হাতে কতোবার আটক হয়ে জেলে গেছে এবং এদের বিরুদ্ধে মোট মামলার সংখ্যা কতোগুলো তার হিসাব চাইতে গেলে থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খান সময় চেয়েছেন।
এলাকাবাসী জানায়, একেবারে ছিন্নমূল থেকে কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মিনির আলমডাঙ্গা শহরে রয়েছে তিনটি বাড়ি। ব্যাংকে ব্যালান্স রয়েছে কোটি টাকার ওপরে। আবু জিহাদ খান থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের দায়িত্ব নেয়ার দু’মাসের মাথায় পরিস্থিতি পাল্টে যায়। মাদক সিন্ডিকেট হয়ে পড়ে ছিন্নভিন্ন। মিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার মাদক ব্যবসায়ী চার মেয়ে ও স্বামীরা মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেলে যায়। অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদেরও পুলিশ ধরে ধরে জেলে পাঠাতে থাকে। ধরতে থাকে মাদকসেবীদের।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খান জানান, মিনি এলাকায় থেকে মাদক ব্যবসা করে যাবে সে সুযোগ একেবারে শূন্যের কোটায়। তবে মিনির উচিত হবে আলমডাঙ্গা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করা।