দর্শনার ঐতিহ্যবাহী দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটি নেই ৪ বছর

বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও শিক্ষা কার্যক্রম হচ্ছে ব্যহত ॥ ভেঙে পড়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা

দর্শনা অফিস: শিক্ষার মান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকার গ্রহণ করেছে নানামুখী পদক্ষেপ। শিক্ষাখাতে বাড়ানো হয়েছে প্রচুর অর্থ। গোটা দেশে শিক্ষার বিপ্লব ঘটাতেই সরকারের এ আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষায় মনোযোগী করার লক্ষ্যেই প্রতিবছরের ১ম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে নতুন বই। আধুনিক প্রযুক্তিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার বিদ্যালয়গুলোতে দিয়েছে কম্পিউটারসহ নানা সরঞ্জাম। সরকারের পাশাপাশি বহু সংস্থা শিক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে যখন সরকারের রয়েছে এ ধরনের মহতি উদ্যোগ, তখন টানা ৪ বছর পরিচালনা কমিটি শূন্য রয়েছে দর্শনার ঐতিহ্যবাহী দুটি বিদ্যালয়। দর্শনায় একটি মাদরাসাসহ রয়েছে ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কেরুজ উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণচাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলহেরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দর্শনা ডিএস মাদরাসা, মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঐহিত্যবাহী বিদ্যালয় দর্শনা মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৬ সালে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিদ্যালয়টি সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এ যাবৎ পরিচালনা কমিটি যথাযথ ব্যবস্থায় গঠন হয়েছে। যথারীতি নিয়ম মাফিক তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। ২০১৪ সালে পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হলে পরবর্তী কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জটিলতার সৃষ্টি হয়। দাতা সদস্য মনোনীতকে কেন্দ্র করেই এ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মেমনগরের মোমিনুল ইসলাম ও মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে জটিলতার নিরসনের দাবি আদালতে মামলা দায়ের করেন। যে কারণে স্থগিত হয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচন। তৎকালীন সময় ছেলেদের পড়ালেখার একমাত্র বিদ্যালয় মেমনগর থাকায় মেয়েদের জন্য ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মেয়াদও ২০১৪ সালে শেষ হয়। ওই সালের জুন মাসে পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচন প্রক্রিয়াকালে ভোটার তালিকা নিয়ে সৃষ্টি হয় জটিলতা। এ জটিলতা নিরসনের দাবি তুলে আদালতে মামলা দায়ের করেন ঈশ্বরচন্দ্রপুরের আব্দুল হান্নান। দীর্ঘদিন যাবত পরিচালনা কমিটি না থাকায় বিদ্যালয় দুটির প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেই সাথে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হচ্ছে ব্যহত। অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের জবাবদিহিতা না থাকায় শিক্ষার মান নি¤œগামী হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কমিটিশূন্য বিদ্যালয় দুটির দায়িত্ব পালনে রয়েছেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি অফিসে যোগাযোগের কথা বলেন। দীর্ঘদিন বিদ্যালয় দুটিতে পরিচালনা কমিটি না থাকায় একদিকে যেমন থমকে গেছে উন্নয়ন, অন্যদিকে অনেকটাই খেয়াল খুশি মতো চলছে শিক্ষকরা। ফলে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় দুটির ঐতিহ্য হারানোর উপক্রম হচ্ছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান করে বিদ্যালয় দুটির পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবি তুলেছে অভিভাবক মহল।