১৬ জানুয়ারি দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির নির্বাচনের ৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে

নির্বাচনের নেই কোনো আগাম প্রস্তুতি ॥ সাধারণসভার দিনক্ষণ হয়নি নির্ধারণ
দর্শনা অফিস: দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। গত নির্বাচন মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে-ভাগে প্রস্তুতি নেয়া হলেও এবার তার উল্টে। আগামী ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনের ৩ বছর পূর্ণ হলেও সাধারণসভার কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। কবে নাগাদ অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধারণসভা তা জানে না কেউই। এরই মধ্যে গুটি কয়েক প্রার্থী মাঠ চষতে শুরু করেছেন। সাম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে নতুনরাই বেশি। ১৮৬২ সালে বর্তমানে দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশন প্রতিষ্ঠা হয়। ঢাকা-কোলকাতা সারাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের মধ্যদিয়েই শুরু হয় স্টেশনের কার্যক্রম। দর্শনা স্টেশন প্রতিষ্ঠার পরপরই গড়ে উঠে দর্শনা রেলবাজার। ২-১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বাজার শুরু হলেও বর্তমানে দর্শনা রেলবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। বাজার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার কমিটি না থাকলেও ব্যবসায়ীরা মুরুব্বি মেনে চলতো। বয়জ্যেষ্ঠ ব্যবসায়ীকে অভিভাবক হিসেবে সম্মান করা হতো। বাজার প্রতিষ্ঠার ১৩৮ বছরেও কোনো প্রকার নির্বাচন ও মনোনীত কমিটি গঠন হয়নি। ২০০০ সালের দিকে প্রথম নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন, হাজি খন্দকার শওকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রাবেক সরকার। এরপর টানা ১ যুগ বাজারে কোনো নির্বাচন হয়নি। ২০১২ সালের শুরুর দিকে বাজারের ব্যবসায়ীরা জেগে ওঠে নির্বাচনের জন্য। শুরু হয় নির্বাচনের কাযক্রম। পুরো বাজারের ব্যবসায়ী হয়ে ওঠে নির্বাচনমুখী। একপর্যায়ে ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি বাজারে সভার মাধ্যমে গঠন করা হয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। হাজি আজির বক্সকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে গঠন করা হয় ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। সে নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সাবির হোসেন মিকা। সে নির্বাচনের ৩ বছর না পেরুতেই ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণসভায় গঠন করা হয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এ কমিটির অন্যান্যদের মধ্যে পরিবর্তন থাকলেও অপরিবর্তীত থাকেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাজি আজির বক্স। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ৩য় ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি। সে হিসেব মতে আগামী ১৬ জানুয়ারি দোকান মালিক সমিতি নির্বাচনের ৩ বছর পূর্ণ হবে। সমিতির ৩ বছর পূর্ণ হতে আর মাত্র ১৩ দিন বাকি থাকলেও এখনও পর্যন্ত সাধারণসভার দিনক্ষণ নির্ধারণ হয়নি। বিগতবার কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণের বেশ আগেই সাধারণসভার আয়োজন করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সে রেষ রয়ে গেছে। ফলে এবার সাধারণসভার কোনো সাড়াশব্দ না থাকায় অনেকেই হচ্ছে হতাশ। এ দিকে দর্শনা দোকান মালিক সমিতির ৪তম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। কেউ কেউ ছবি সংবলিত ডিজিটাল নববর্ষের ব্যানার টাঙিয়ে নিজেকে প্রার্থী জানান দিয়েছেন। আবার কেউ জানান দিচ্ছে সমাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে। এ ছাড়া অনেকেই নীরব প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। এ দিকে ব্যবসায়ীদের অনেকেই দাবি তুলে বলেছেন, দোকান মালিক সমিতির ভোটার যেন শুধুমাত্র ব্যবসায়ীরাই হয়। বহিরাগতরা যাতে এ সমিতির ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সেদিকে খেয়াল রেখে ইতোপূর্বের যে সকল বহিরাগত ভোটার হয়েছে তাদেরকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি নির্বাচন হলেও আমরা শপথগ্রহণ করেছিলাম ১০ ফেব্রুয়ারিতে। সাধারণসভার ব্যাপারে কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত এখনো নিতে পারিনি। আমি সকালে ভারতে যাচ্ছি, ভারত থেকে ফিরে এসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের কাজ সম্পন্ন করা হবে। সাধারণ সম্পাদক সাবির হোসেন মিকা বলেন, মার্চের শেষ অথবা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন দেয়া হতে পারে। নির্বাচনের ১০ দিন আগে সাধারণ সভা দেয়া হবে।