অরক্ষিত লেবেলক্রসিং এবং সমাজের বাস্তবতা

মানুষ বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকিও। যদিও মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, তবুও মৃত্যু মিছিল মানুষকে কোনোভাবেই স্বস্তি দিচ্ছে না। যেসব কারণে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়েছে তার মধ্য অন্যতম হলো দুর্ঘটনা। আর এই দুর্ঘটনার প্রাণহানির অন্যতম কূপ হয়ে যেন মানুষের প্রাণ কাড়ছে রেললাইনের অরক্ষিত লেবেলক্রসিং। মানুষ বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রয়োজনের তাগিদেই অরক্ষিত লেবেলক্রসিঙের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ের তরফে তড়িৎ তেমন পদক্ষেপ নেয় না, নিতে পারে না।
চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণপ্রান্তে গড়ে ওঠা বেশ ক’টি অরক্ষিত লেবেলক্রসিংটি ভয়ানক রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে স্টেশন ঘেষা রেলবস্তি ও ফার্মপাড়া রেল কোয়ার্টার লেবেলক্রসিংটি এতোটাই ভয়ানক হয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে যার বর্ণনা করাও কঠিন। প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার আশঙ্কা ফুটে উঠছে। স্থানীয়রা প্রথম দিকে পায়ে হাঁটা লেবেলক্রসিং হিসেবে গড়ে তুললেও পরে মোটরসাইকেল বাইসাইকেল পার হওয়ার মতো উপযোগী করা হয়। ওই ক্রসিংটি এখন অটোরও রাস্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যখন শহীদ আবুল কাশেম সড়কের তথা রেলওয়ে স্টেশনের উত্তরাপ্রান্তের লেবেলক্রসিঙে গেট নামানো হয় তখন ব্যটারিচালিত অটোর অধিকাংশই স্টেশনের দক্ষিণপ্রান্তের ওই অরক্ষিত লেবেলক্রসিং পার হয়। আর আন্তর্জাতিক রেল যখনই যায় তখনই বড় ধরনের দুর্ঘটনা অল্পের জন্য রক্ষা পায়। এ চিত্র যেন পাশের দোকানিসহ স্থানীয়দের গা সওয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অবশ্যই সকল অরক্ষিত লেবেলক্রসিঙের বিষয়ে নতুন করে বাংলাদেশ রেলওয়েকে ভাবতে হবে। জনগণের প্রয়োজন অনুপাতে অরক্ষিত লেলেবক্রসিং রক্ষিত করা কিম্বা তা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি অতিবগুরুত্ব দিয়ে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনথ্যায় দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়তেই থাকবে, ঝরতেই থাকবে তরতাজা প্রাণ। একের পর এক প্রাণহানী নীরবে মেনে নেয়া মানে মানুষ হয়ে মানুষের জীবনমূল্যকে তাচ্ছিল্য করে তোলা। যা দায়িত্বশীলদের দূরদর্শিতায় ঘাটতির খেসারত।