দারোগার ঘাড়ে কোপমারা মাদকসম্রাট মিন্টু জেলহাজতে

রেলকোয়ার্টার দখল নিয়ে বসবাসই করতো না সম্পদ সম্পত্তিও নিজের মতোই ব্যবহার করতো সে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার রেল কোয়ার্টারের জবর দখলদার একাধিক মাদক মামলার আসামি মিন্টুকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আমলি আদালত জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুকবুল হোসেন এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, রিমান্ডে নেয়ার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। আবেদন করা হবে।
মিন্টু চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের অদূরবর্তী ফার্মপাড়া প্রান্তের রেলওয়ের কোয়ার্টারে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে বসবাস করার পাশাপাশি এলাকায় মাদকের আখড়া গড়ে তোলে। এলাকার বিভিন্ন আখড়া থেকে সে ও তার গ্যাং নিয়মিত টাকা আদায় করে আসছিলো। স্থানীয় অপর একটি গ্যাঙের সাথে তার গ্যাঙের ক্যাডার শওকতের বিরোধ বাঁধলে মিন্টু ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। পরপর কয়েকজনকে কুপিয়েও খ্যান্ত না হয়ে গত সোমবার রাত ৯টার দিকে টহল পুলিশের নেতৃত্বে থাকা শহর ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ ওহিদুল ইসলামের ঘাড়ে কোপ মারে। হাতে নাতে ধরাপড়ে মিন্টু। তখন তার মুখে ছিলো মদের তীব্র দুর্গন্ধ। গুরুতর আহত অবস্থায় ধরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসআই ওহিদুল ইসলামকেও ভর্তি করা হয় হাসপতালে। মিন্টুকে নেয়া হয় রাজশাহী মেডিকেলে আর এসআাই ওহিদুলকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মিন্টুর শারীরিক অবস্থা তেমন জটিল না হওয়ায় সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। গতপরশু রাতে ফেরত নেয়ার পর গতকাল বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয় তাকে।
এদিকে মিন্টু সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে এলাকাবাসী বলেছে, ওর পিতা বুদো শেখ এক সময় সিনেমাহলপাড়ায় ভাড়ায় থাকতো। পরে ঈদগাপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে বসবাস শুরু করে। রিকশাচালক পিতার সাথেই এক সময় মিন্টু থাকতো, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। কিছুদিন মাদরাসার ছাত্র হয়ে কোরআনে হাফেজও হওয়ার চেষ্টা করেছে। ওদিকে ওর যতোটা আন্তরিকতা ছিলো তার বেশি ঝোঁক ছিলো অপরাধমূলক কর্মকা-ে। ফার্মপাড়ার এ মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে বিয়ে করে জোরজবরদস্তিতে রেলকোয়ার্টার দখলে নেয় সে। কোয়ার্টার সংলগ্ন আমবাগানসহ বিশাল সম্পতির স্বঘোষিত মালিক হয় সে ও তার গ্যাং। একের পর এক মামলা হলেও তার সাথে বসেই পুলিশের কোনো কোনো অফিসারকে চা পান করতে দেখেছে স্থানীয়রা। কিছুদিন আগে যে মিন্টুর সাথে এসআই ওহিদুলকে প্রকাশ্যে কানে কানে কথা বলতে দেখেছে স্থানীয়রা, সেই মিন্টুই ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই দারোগা ওহিদুলের ঘাড়ে কোপ মেরে এখন জেলহাজতে। অবশ্য গ্রেফতারের দিন থেকেই মিন্টুকে ক্রসফায়ার দেয়া হচ্ছে বলে জোর গুজব গুঞ্জন রয়েছে এলাকায়। এসব গুজব গুঞ্জনের অবসান হয়েছে গতকাল, যখন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয় তখন।