খুলনা বিভাগের ২ লাখ গভীর নলকূপে ১৪ বছরে আর্সেনিক পরীক্ষা হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার: খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় আর্সেনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয় না গত ১৪ বছরেও। ইতিমধ্যে এ অঞ্চলের ৮২ শতাংশ নলকূপে আর্সেনিক সনাক্ত করা হয়েছে। জেলাগুলোতে খাবার পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ২ লাখ নলকূপ রয়েছে। এ অঞ্চলের জেলাগুলোতে আর্সেনিক আক্রান্ত ইউনিয়নের সংখ্যা বাড়ছে। প্রায় ৩ হাজার মানুষ আর্সেনিকোসিসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যশোর ও খুলনা জেলায় বেশি। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রকাশনায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

২০০৩ সালে সর্বশেষ গভীর নলকূপগুলোতে আর্সেনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। আর্সেনিক মিটিগেশন প্রজেক্ট বন্ধ হওয়ার পর আর   পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়নি। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত দু’বছর আগে নতুন নলকূপ স্থাপনের পূর্বে আর্সেনিক, লবণাক্ততা ও আয়রণ পরীক্ষা করা হয়।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য ২ লাখ ১৪ হাজার ১২৭টি গভীর নলকূপ বিভিন্ন সময় স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে খুলনা জেলায় ২৯ হাজার ৯৬৫টি, বাগেরহাটে ৩০ হাজার ৫৩০টি, সাতক্ষীরায় ৩২ হাজার ৯৬৩টি, যশোরে ৩১ হাজার ৯১৭টি, ঝিনাইদহে ২০ হাজার ৫৬৭, মাগুরায় ১৩ হাজার ৪৯টি, নড়াইলে ১১ হাজার ৬১৯টি, কুষ্টিয়ায় ২৭ হাজার ৭১০টি, চুয়াডাঙ্গায় ১২ হাজার ৭৫৬টি এবং মেহেরপুরে ৮ হাজার ১৩টি নলকূপ রয়েছে।

যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল মোশারফ জানান, ইদানিং স্থাপিত নলকূপগুলোর আর্সেনিক, আয়রন ও লবণাক্ততা পরীক্ষা করা হয়। উল্লিখিত তিনটি বিষয় কোনো স্থানে পাওয়া গেলে সেখানে নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে না। তার দেওয়া তথ্য মতে, ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় নতুন স্থাপিত এলাকায় নলকূপের পানি পরীক্ষায় আর্সেনিক শনাক্ত হলে ঠিকাদারের বিল পরিশোধ হয় না। তিনি জানান, জেলার অভয়নগর, চৌগাছা ও শাশায় আর্সেনিকে আক্রান্ত ইউনিয়নের সংখ্যা বেশি।

বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম শামীম আহমেদ জানান, নতুন নলকূপ স্থাপনের পূর্বে আর্সেনিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। জেলার চিতলমারী, কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা আর্সেনিক কবলিত। মংলা ও শরণখোলা উপজেলায় আর্সেনিকের পরিমাণ কম। ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের জন্য পুকুর খননের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম কায়েসের দেয়া তথ্য মতে, কালিয়া উপজেলার চার ইউনিয়নে ৭২ শতাংশ নলকূপে, লোহাগড়ায় ৫২ শতাংশ ও জেলা সদরের ৩৮ শতাংশ নলকূপে আর্সেনিক সনাক্ত করা হয়েছে।

ঝিনাইদহে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, জেলা সদরের অচিন্তনগর এবং কালিগঞ্জ উপজেলার দুটি গ্রামে আর্সেনিকের প্রবণতা বেশি।