গাংনীতে বিএনপির দু’টি অফিসে হামলা ॥ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীতে বিএনপির দু’টি অফিসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের গাংনী উপজেলা রাজনৈতিক কার্যালয় ভাঙচুর করে আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় উপজেলা যুবলীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি মিছিল বের করা হয়। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নেয়। মিছিল থেকে স্বাধীনতা বিরোধীদের হুশিয়ারী করে স্লোগান দেয়া হয়। হাসপাতাল বাজার ঘুরে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছায় মিছিলটি। এ সময় উত্তেজিত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের গাংনী উপজেলা রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা করে। অফিসের শাটারের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে কয়েকজন। প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর করে। প্লাস্টিক ও স্টিলের চেয়ারগুলো অফিসের বাইরে বের করে তাতে আগুন দেয়া হয়। বেশকিছু সময় ধরে চেয়ারগুলো পুড়ে ভষ্মীভূত হয়।
এদিকে মিল্টনের অফিসের চেয়ারে আগুন দেয়ার পর উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনের নিজস্ব মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত অফিসের গেটের তালা ভাঙার চেষ্টা করা হয়।
এদিকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। নেতাদের চেষ্টায় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা শান্ত হয়। এ সময় বাসস্ট্যান্ড ট্রাফিক আইল্যান্ডে প্রতিবাদ সভার মধ্য দিয়ে কর্মসুচি সমাপ্ত করেন নেতৃবৃন্দ। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন।
বক্তৃতায় বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে নাশকতার অভিযোগ তুলে মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের বিক্ষোভ মিছিল যাওয়ার সময় বিএনপি অফিসের ওপর থেকে ইট নিক্ষেপ করে। ইটের আঘাতে পৌর ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সজিব হোসেনের মাথা ফেটে যায়। এ সময় মিছিলে থাকা নেতাকর্মীরা বেসামাল হয়ে পড়েন। সজিবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, বিজয় দিবসের কর্মসুচি পালনের চুড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে সন্ধ্যায় নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি অফিস থেকে বের হওয়ার পরেই হামলা হয়। বিজয় দিবসে ব্যাপক শোডাউনের আয়োজন করেছিলাম। কর্মসূচি বাধাগ্রস্থ করতেই হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা বানোয়াট ও মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকেও বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি চলছিলো। বিএনপির অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করতেই ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে। হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে প্রেরণ করা হয়। তবে তার আগেই কিছু ঘটনা ঘটে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।