কেরুজ চিনিকলের আখ মাড়াই মরসুমের উদ্বোধন ১ ডিসেম্বর

দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী দর্শনা কেরুজ চিনিকল এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। প্রায় ৮০ বছর বয়সি কেরুজ চিনিকলটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে চললেও সরকারের নেকনজরে তা বদলাতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে মিলের আধুনিকায়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। যে কারণে কিছুটা হলেও করুণদশা থেকে উন্নীত হয়েছে মিলটির। প্রতি বছর লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে যেমন মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়, তেমনিভাবেই চরম হতাশা নিয়েই শেষ করা হয় মাড়াই কার্যক্রম। সেই সাথে চিনি বিক্রির বিড়াম্বনায় পড়তে হয় চিনিকল কর্তৃপক্ষকে। এবার চিনির বোঝা মাথায় না থাকলেও লোকসানের বোঝা রয়েছে। লোকসান পুষাতে না পারলেও লাভের আশায় এবারের আখ মাড়াই মরসুমের শুরু করছে মিল কর্তৃপক্ষ। সে লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে নানামুখি প্রস্তুতি। সম্প্রতি আখচাষিদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণের মধ্যদিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছুতে না পারলেও চিনিকল কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। বারবার লোকসান গোনা এ মিলটি এবার লাভের আশায় পথচলা শুরু করেছে। চিনিকলের ২০১৭-১৮ আখ মাড়াই মরসুম অনেকটা শাদামাটা পরিবেশে উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আখচাষিদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্য নিয়ে এবারের যাত্রা শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা দেখার অপেক্ষামাত্র। আগামী ১ ডিসেম্বর কেরুজ চিনিকলের ২০১৭-১৮ আখ মাড়াই মরসুমের যাত্রা শুরুর সকল প্রস্তুতিসম্পন্ন করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ১৭ নভেম্বর বয়লারে আগুন নিক্ষেপ করা হয়েছে। ২৭ ও ২৮ নভেম্বর ওয়াটারট্রাই সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে ছোটখাটো ত্রুটির সন্ধান মিললে তা সারিয়ে নেয়া হবে। চলতি মাড়াই মরসুমের তুলনায় দ্বিগুনেরো বেশি পরিমাণ আখ রোপণ করা হয়েছে চলতি রোপণ মরসুমে। যে কারণে আগামী ২০১৮-১৯ আখ মাড়াই মরসুমে প্রচুর পরিমাণে আখ মাড়াই করতে পারবে কেরুজ চিনিকলটি। এ মরসুমে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের বেধে দেয়া নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে ৮০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৫ হাজার ৮শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করতে হবে। ৭০ মাড়াই দিবসে চিনি আহরণের গড় হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে আখ মাড়াইয়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হলেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অনিশ্চিত। কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আহরণের গড় হার নির্ধারণের বিষয়টি।
এ দিকে এবারের আখ মাড়াই মরসুমের উদ্বোধনকালে ভিআইপি কোনো অতিথিকে নিমন্ত্রণ করা হচ্ছে না। অনেকটাই শাদামাটা পরিবেশে উদ্বোধন করা হচ্ছে আখ মাড়াই মরসুমের যাত্রা। কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন বলেছেন, ১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় মিলের ক্যান ক্যারিয়ার চত্বরে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে ২০১৭-১৮ আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু করা হবে। সে লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে কৃষকদের মধ্যে পূজি বিতরণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়েছে। এ মরসুমে লোকসান কাটিয়ে মুনাফা অর্জনের জন্য মিল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে নানামুখি পদক্ষেপ। আখচাষিদের সুবিধা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি, শ্রমিক-কর্মচারীদের দিকেই খেয়াল রাখা হচ্ছে। তিনি এ অঞ্চলের চাষিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরও বলেছেন, দেশের ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান, জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান কেরুজ চিনিকলকে রক্ষা করতে বেশি বেশি করে আখ চাষের কোনো বিকল্প নেই।