বিএডিসির কন্টাক্টগ্রোস চুয়াডাঙ্গা জোনে বোরো ধানের আবাদ এবার হুমকির মুখে

দীর্ঘদিনের কয়েকজনের আধিপত্যে ছেদ : কৃষক সেজে ভাগিদার নেতার সংখ্যা বৃদ্ধিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত
স্টাফ রিপোর্টার: বিএডিসির চুয়াডাঙ্গা কন্টাক্টগ্রোস জোনে এবার বোরো ধান আবাদ ও অধিক বীজ গ্রহণ শুধু অনিশ্চয়তার মধ্যেই পড়েনি, কৃষক বলে দাবি করা নেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দিকে মোড় নিচ্ছে। স্থানীয়দের অনেকেই এ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে কয়েকজন একক আধিপত্য বিস্তার করে রাখলেও তাতে এখন অনেকেই ভাগ বসাচ্ছে। ফলে কর্তারও আর গোপনীয়তা রাখতে পারছেন না।
গতকাল একদল যুবক চুয়াডাঙ্গার দৌলাতদিয়াড়স্থ বিএডিসি কন্ট্রাক্টগ্রোস উপপরিচালকের দফতরে উপস্থিত হয়ে হাম্বি-তাম্বিতে শেষ পর্যন্ত আমন্ত্রিত কৃষকদের নিয়ে বৈঠক হয়নি। কৃষক ও কর্মকর্তাদের জন্য সাজানো আরাম কেদারাগুলো পড়ে ছিলো ফাঁকা। আজ মঙ্গলবার বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ পযন্ত কোনদিকে মোড় নেবে তা নিয়ে শঙ্কায় স্বয়ং উপপরিচালক তাজুল ইসলাম ভুইয়া। ধানচাষি সেজে ভাগিদারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বোরো ধানের আবাদ এবার পিছিয়ে পড়ছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরেই তালিকাভুক্ত চাষিদের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন করে থাকে বিএডিসি কন্ট্রাক্টগ্রোস বিভাগ। শর্তপূরণ করা কৃষকদের মাঝে বীজ সরবরাহ করা হয়। ওই কৃষকদের নিকট থেকেই চড়ামূল্য দিয়ে বীজ হিসেবে ধান কেনা হয়। ওই তালিকাভুক্ত কৃষক কারা? তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানাভাবে গোপনীয়তা রক্ষাই শুধু করা হয়নি, কয়েকজনের আধিপত্যে সাধারণ কৃষকদের অনেকেই তালিকাভুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে দিনের পর দিন ঘুরেও কর্তাদের দৃষ্টি কাড়তে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি বড় বড় কৃষক সেজে তারাই খাতা কলমে তাদের নিজের এবং লিজের জমিতে আবাদ দেখিয়ে বাইরে থেকে ধান সংগ্রহ করে দেদারছে বীজ হিসেবে দেয়া হয় বিএডিসির ঘরে। ফলে বীজের গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। দেড় দু’যুগ ধরে হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তি বিএডিসির কিছু কর্মকর্তার যোগসাজসে ওই ব্যবসা করে কোটিপতি বনে গেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। দেড় দু’বছর ধরে সেই একক আধিপত্যে ছেদ পড়েছে। ভাগ নেয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিনের গোপনীয়তা রক্ষা করা দূরের কথা এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই যেন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে কারণে গত এক মাসেও কোনো কৃষক নেতাকে কতো একর জমিতে ধানের আবাদের জন্য তালিকাভুক্ত করা হবে তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। অথচ বোরো ধানের আবাদের সময় পার হওয়ার পথে। ইতোমধ্যেই নাবি হতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, চলতি মাসের শুরুতেই বিএডিসির চুয়াডাঙ্গা কন্ট্রাক্টগ্রোস জোনের ২ হাজার ৭শ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করানোর নির্দেশনা পাওয়া গেছে। ১০ নভেম্বরের মধ্যেই তালিকাভুক্ত কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। বীজ বিতরণ তো দূরের কথা মাস পার হওয়ার পথে অথচ কৃষকই তালিকাভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে উপপরিচালক তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যায় রয়েছি। ধানচাষি সেজে তালিকাভুক্ত হওয়ার নেতার সংখ্যা বেড়ে গেছে। সে কারণেই বিলম্ব হয়েছে। তবে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে ।