গাংনীতে হিমাগারেই আলুর অঙ্কুর ॥ বিপাকে চাষি

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর বামন্দী জামান কোল্ড স্টোরেজে (হিমাগার) আলুর গাছ বেরিয়েছে। কর্র্তৃপক্ষের অপারগতায় হাজার বস্তা আলুতে পঁচন ধরেছে। ফলে চলতি রবি মরসুমে আলুর আবাদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ওই হিমাগারে রাখা আলু মালিকরা।
জানা গেছে, বামন্দী বাজারের জামান কোল্ডা স্টোরেজে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিভিন্ন এলাকার চাষিরা আলু সংরক্ষণ করেন। মৌসুমভিত্তিক ৩শ টাকা ভাড়া চুক্তিতে প্রতিবস্তা আলু সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয় হিমাগার কর্তৃপক্ষ। কিছুদিন আগে থেকে হিমাগার থেকে আলু বের করা শুরু হয়। চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে চাষি ও ব্যবসায়ীদের আলু উত্তোলনের শেষ সময় নির্ধারিত ছিলো। কিন্তু অক্টোবরের শেষের দিকে দু’দফা বৃষ্টির ফলে আলু বীজ বপণ দেরি হয়েছে। ফলে হিমাগারে বেশকিছু বস্তায় আলুর অঙ্কুর দেখা দেয়। গেলো বছর ১২ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয় বলে হিমাগারে কর্মরতরা জানিয়েছেন।
গাংনী উপজেলার এলাঙ্গি গ্রামের আলুচাষি আশরাফুজ্জামান টুটু বলেন, চলতি মরসুমে চাষের জন্য হিমাগারে ১১ বস্তা আলু সংরক্ষণ করি। বেশ কয়েকদিন থেকে ঘুরেও আলু পাচ্ছিলাম না। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে আমার আলু দেয়া হয়েছে। কিন্তু তা বিভিন্ন জাতের। আমার আলুর জাত কার্ডিনাল। হিমাগার কর্তৃপক্ষ আমাকে কার্ডিনাল জাতের সাথে কয়েক বস্তা অন্য জাতের আলু দিয়েছেন। বেশিরভাগ আলু অঙ্কুর হয়ে গাছ দেখা যাচ্ছে। এতে বীজের মান নষ্ট হয়েছে। কোদাইলকাটি গ্রামের আলু ব্যবসায়ী লালন হোসেন বলেন, কুষ্টিয়ার আলু ব্যবসায়ী হাজি মইনুদ্দীনের ১হাজার ৪শ বস্তা, মেহেরপুরের বাবলু মিয়ার ১হাজার বস্তা ও বামন্দীর বাবু মিয়ার ৮শ ৮০ বস্তা আলু আমার দায়িত্বে ওই হিমাগারে সংরক্ষণ ছিলো। বিক্রি প্রায় শেষের দিকে। কিছু আলু নিয়ে সমস্যা হতে পারে। বস্তার ভেতরেই আলুর গাছ বেরিয়েছে।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, হিমাগার মালিক কামরুজ্জামান হার্টের অসুখে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এতে দায়দেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি মাসে আলুর বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাতে শ্রমিক খরচ হয় ৩৬ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ বিল আসে ৯৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। অন্য দিকে রয়েছে মোটা অংকের ব্যাংক ঋণ। সব মিলিয়ে আর্থিক দৈন্যতার কারণেই হিমাগারে আলুর কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে হিমাগার পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত আনিছুর রহমান বলেন, হিমাগারে এখন এক থেকে দেড় হাজার বস্তা আলু আছে। আলু ছাড়ের প্রথম দিকে কোনো সমস্যা হয়নি। শেষের দিকে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। প্রতিটি হিমাগারে এমন সমস্যা হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাবউদ্দীন বলেন, আমার কাছে কোনো চাষী ও ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ করেননি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উভয়পক্ষ যাতে রক্ষা পান সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।