চুয়াডাঙ্গার বোয়ালমারীতে জামাইয়ের ধারালো অস্ত্রের কোপে শাশুড়ি জখম

স্টাফ রিপোর্টার: ক’দিনের টানা বর্ষণে ইটভাটার কাজ বন্ধ। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইটভাটা শ্রমিক তুহিনকে। তার ওপর আবার এনজিওর কিস্তির টাকা। ঠিক মতো সংসারই চালাতে পারছেন না, এনজিওর কিস্তির টাকা দেবে কিভাবে। তাই স্ত্রী সুমাইয়াকে টাকা আনতে পাঠানো হলো বাপেরবাড়িতে। টাকা কম আনার কারণে সুমাইয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হলো। খবর পেয়ে মা সুখজান বেগম মেয়ে আনতে গেলো তার শ্বশুরবাড়িতে। জামাই তুহিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাশুড়িকে করলো রক্তাক্ত জখম। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সুখজান বেগমকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বোয়ালমারী গ্রামে। সুখজান বেগম চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সাতগাড়ি নতুনপাড়ার শাহাদত আলীর স্ত্রী।
পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের মোমিনপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারীর ঝন্টুর ছেলে দিনমজুর তুহিনের সাথে বিয়ে হয় চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর সাতগাড়ি নতুনপাড়ার শাহাদত আলীর মেয়ে সুমাইয়ার সাথে। সংসারের টানা পোড়েনের কারণে তুহিন সুমাইয়াকে দিয়ে প্রায় তার বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনতে বাধ্য করাতো। গতকাল রোববার একটি এনজিওর কিস্তির দিন ছিলো। টানা বর্ষণে ক’দিন ঠিকমতো কাজ না হওয়ার কারণে কিস্তির টাকা ছিলো না তুহিনের কাছে। তাই গতপরশু শনিবার বিকেলে তুহিন কিস্তির ১ হাজার টাকা আনতে সুমাইয়াকে তার বাপেরবাড়িতে পাঠায়। সুমাইয়ার বাবা শাহাদত আলী তাকে ৮শ টাকা দেন। ওই টাকা নিয়ে সুমাইয়া গতকাল রোববার ভোরে বোয়ালমারী ফেরেন। সুমাইয়া ওই টাকা তুহিনের কাছে দিলে টাকা কম দেখে সুমাইয়াকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। খবর পেয়ে সুমাইয়ার মা সুখজান বেগম মেয়েকে নিতে আনতে বোয়ালমারী আসেন। এরপর শুরু হয় জামাই-শাশুড়ির ঝগড়া। একপর্যায়ে তুহিন ধারালো দাঁ দিয়ে সুখজান বেগমকে কোপাতে থাকে। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় প্রতিবেশিরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে আহত সুখজান বেগমকে আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য মানবাধিকার সংস্থা লোকমোর্চা তার পাশে দাঁড়ায়। গতকাল দুপুরে সদর উপজেলা লোকমোর্চার সদস্যরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে সুখজান বেগমের শয্যা পাশে যান, তার সাথে কথা বলেন এবং তুহিনের বিরুদ্ধে সব রকম আইনি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস, সহসভাপতি সাহানা ইউসুপ কেয়া, সাধারণ সম্পাদক পারভীন লাইলা, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আহসান আলী, দপ্তর সম্পাদক মাহবুদ সরকার, সদস্য হেনা আক্তার ও ওসিসি অফিসার ইলিন সুলতানা।
ছোটভাই বিয়ে করায় বড় ভাইয়ের আত্মহত্যার অপচেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদার মোমিননগরে ছোটভাই পরিবারের অমতে বিয়ে করায় বড়ভাই ইটভাটার শ্রমিক ইন্নাল হোসেন (৪০) গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে। ইন্নাল হোসেন দামুড়হুদার আটকবর মোমিননগরের আব্দুল জব্বারের বড় ছেলে। গতপরশু শনিবার রাতে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, ইন্নালের ছোটভাই আয়নাল হক ভালোবাসার টানে বাড়ির পাশের একটি মেয়ের সাথে বিয়ে করেন ক’দিন আগে। এ নিয়ে ইন্নালের সাথে আয়নালের মনমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে গতপরশু শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এলাকার বর্ষা ইটভাটার অদূরে রাস্তার ধারে একটি গাছের সাথে গলায় গামছা পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। স্থানীয় পথচারীরা টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দামুড়হুদার চিৎলা হাসপাতালে নেয়। ইন্নালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওই রাতেই উন্নত চিকিৎসারর জন্য তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।