গাংনীতে গরু চুরি নিয়ে গণ্ডগোল ॥ সেই কামাল এবার অভিযুক্ত গরু চোরের পক্ষে

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সিন্দুরকৌটা গ্রামে চিহ্নিত কয়েক গরুচোরের দাপটে দিশেহারা এলাকাবাসী। ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রাম থেকে চুরি হওয়া দুটি গরু ফেরত দেয়া নিয়ে বিরাজ করছে উত্তেজনা। গতকাল রোববার সালিস হলেও গরু উদ্ধার হয়নি। এ সূত্র ধরেই অভিযুক্ত গরুচোর পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়েছে কোদাইলকাটি গ্রামের আলমগীরের ওপর। অপরদিকে অভিযুক্ত গরুচোরদের পক্ষ নিয়ে আবারো সমালোচনার মুখে সিন্দুরকৌটা গ্রামের কামাল ওরফে মাছ কামাল।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের লিটন হোসেনের জামাইয়ের বাড়ি পার্শবর্তী মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামে। গত রোববার রাতে লিটনের জামাইয়ের গোয়াল থেকে দুটি গরু চুরি হয়। সিন্দুরকৌটা গ্রামের চিহ্নিত গরুচোর রফিকুল ও টিপনের কাছে গরু থাকতে পারে এমন খবর পায় গরু মালিক। গতকাল সকালে শশুরবাড়ির লোকজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নিয়ে সিন্দুরকৌটা গ্রামের রফিকুলের বাড়িতে হাজির হন তিনি। নানা প্রকার দেনদরবারে রফিকুল তাদের জানায়, কোদাইলকাটি গ্রামের রফিকুলের কাছে গরু আছে। টাকার বিনিময়ে রফিকুল গরু ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কয়েকদিন ঘোরাতে থাকে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অনুরোধে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদ। গতকাল রোববার পরিষদেসভা শেষে এলাকার চার মেম্বার কোদাইলকাটি গ্রামে দিয়ে আলমগীরের সাথে কথা বলেন। আলমগীর চ্যালেঞ্জ করে বলেন, রফিকুলের সাথে গরুর বিষয়ে তার কথা হয়নি। এমনটি রফিকুলের সাথে তার তেমন পরিচয় নেই। মোবাইলে কথাও হয় না। গ্রামের লোকজনের সাথে কথা বলে আলমগীরের বিষয়ে খোঁজ নেন মেম্বারবৃন্দ। শেষ পর্যন্ত রফিকুলই গরু চুরি করেছে বলে তাদের কাছে প্রতীয়মান হয়। তাই এ বিষয়ে আজ সোমবার আবারো পরিষদে বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মনস্ত করে মেম্বাররা বাড়ি ফিরে যান।
এদিকে রফিকুল যখন চোর সাব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই টনক নড়ে তার অভিভাবক হিসেবে পরিচিত সিন্দুরকৌটা গ্রামের কামাল হোসেন ওরফে মাছ কামালের। সন্ধ্যায় তিনি রফিকুলসহ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে কোদাইলকাটি গ্রামে হানা দেয়। এসময় আলমগীরকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করলে সংঘর্ষ অবস্থা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পালিয়ে যায় কামাল ও তার লোকজন। এ নিয়ে কোদাইলকাটি গ্রামবাসী ও সিন্দুরকৌটা গ্রামের কামাল হোসেন পক্ষের মাঝে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। অবশ্য বিষয়টির সমাধানে আজ উভয় পক্ষকে থানায় হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন গাংনী থানার ওসি।
স্থানীয় আরো জানা গেছে, রফিকুলসহ তার সঙ্গীয় কয়েকজন এলাকার চিহ্নিত গরু চোর। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী ও চুরি ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। এরা সবাই কামাল ওরফে মাছ কামালের লোক হিসেবে পরিচিত। কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে এলাকায় বেশ দাপটের সাথে রয়েছেন। ফলে রফিকুলদের কোনো অপকর্মের প্রতিকার পাচ্ছে না এলাকাবাসী। গেল ১৫ অক্টোবর কোদাইলকাটি গ্রামের এক বিধবার ঘরে উঠেছিলো কামাল হোসেন। অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে প্রতিবেশিরা কামালকে ধাওয়া করে। ওই বিধবার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হচ্ছেন আলমগীর হোসেন। ওই দিনে ধাওয়া খেয়ে কামাল হোসেন হুমকি দিয়েছিলো আলমগীরকে। বিধবার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতেই আলমগীরকে চোর সাব্যস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।