কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না : কাদের

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোনো দলের অধীনে নয়, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে এবং ইসি চাইলে সময়ের প্রয়োজনে যেখানে দরকার সেখানে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে পারে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির সমাবেশে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এ বিষয়ে কাদের বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। সে সময় যে সরকার থাকবে সেই সরকার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো নির্বাচন কমিশনকে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে।

নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি (বিচারিক) ক্ষমতা ও ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহারের বিরোধিতা করে বিএনপির দাবির বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ইভিএম সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি তিনি চান না, তিনি চান ২০০১ সালের মতো ‘ম্যাকানিজমের নির্বাচন’। সে জন্য তিনি ইভিএম চান না। আমরা ইভিএম চাই। তবে বিএনপির এমন দাবিকে আমি অযৌক্তিক দেখি না, রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা তাদের অধিকার আছে। তবে এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার, তারাই ঠিক করবে। সেনা মোতায়েনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সেনা মোতায়েন চায় না, কথাটা ঠিক নয়। আমরা চাই, নির্বাচন কমিশন সময়ের প্রয়োজনে যেখানে প্রয়োজন সেখানে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে পারে। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতি প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, আপনি তো দুই দফায় দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। কোনো নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েছিলেন?

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়ার ক্ষমার নমুনা ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা। একটাই নমুনা দিলাম। তিনি এখন ক্ষমার রাজনীতি না, ক্ষমার নাটক করছেন। তিনি জানেন তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে তার হয়তো দণ্ড হয়ে যাবে। সে কারণে তিনি এখন ক্ষমার নাটক সাজাচ্ছেন। খালেদা জিয়ার ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, জুলুমতো করেছে বেগম জিয়া ও বিএনপি। তারা ক্ষমতায় থাকতে আমাদের নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমামকে খুন করেছে। তাদের হাতে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীর রক্তের দাগ এখনও আছে। আওয়ামী লীগ কেন ক্ষমা চাইবে?

খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, যিনি জুলুম করেছে; তিনি তো আজও জাতির কাছে ক্ষমা চাননি। তার কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। শেখ হাসিনা তো কোনো অন্যায় করেন নাই, তিনি কেন ক্ষমা চাইবেন?

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বক্তব্য ছিলো শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহির্প্রকাশ। প্রধান বিচারপতি সংক্রান্ত খালেদা জিয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে আমি পরামর্শ দেব, আপিল বিভাগের যে পাঁচজন বিচারপতি এখন আছে, তাদেরই জিজ্ঞাসা করুন। সরকারই পদত্যাগে বাধ্য করেছে, না তারা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কাজ করবেন না এমন বক্তব্য দিয়েছেন। সেটা তিনি (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) ভালো করেই জানেন, এ জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। বিদেশে বাংলাদেশের লোক গিয়ে প্রধান বিচারপতির মতো একজন ব্যক্তিকে পদত্যাগে বাধ্য করাবে এমন অভিযোগ হাস্যকর বলেও মন্তব্য করেন তিনি।